রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য কি

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য কি।

আমাদের বিশ্ব, সাধারন প্রশ্ন উত্তর, নতুন বিশ্ব, অজানা তথ্য, আজকের বিশ্ব, সাধারন জ্ঞান, জেনারেল নলেজ, কুইজ, ধাঁধা, এমসিকিউ, আইকিউ, বিসিএস প্রিলিমিনারি,

রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য কি

কোন বিশেষ অথবা সাধারন উদ্দেশ্যে সাধনের  জন্য সমাজ গঠিত হয়। পক্ষান্তরে , রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে বহুবিধ ও রাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত প্রতিষ্ঠান। সমাজের নির্দিষ্ট কোন সীমা রেখা নেই , রাষ্ট্রের  নির্দিষ্ট সীমারেখা আছে। 

রাষ্ট্র হল সংগঠিত একটি প্রতিষ্ঠান , আর সমাজ অনেক ক্ষেত্রেই অসংহত। রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারি কিন্তু সমাজের সার্বভৌম ক্ষমতা নেই। রাষ্ট্রের সদস্যপদ বাধ্যতামূলক , কিন্তু সমাজের সদস্যপদ অভ্যাসগত বা ঐচ্ছিক। রাষ্ট্রীয় একটি চিরন্তন স্থায়ী প্রতিষ্ঠান , কিন্তু কোন কোন সমাজ হলো  অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান। 

রাষ্ট্রের বন্ধন তৈরি হয় আইন শৃঙ্খলার মাধ্যম।সমাজের বন্ধন তৈরি হয় স্নেহ ভালোবাসা প্রীতি ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে। 

পদ্ধতিগত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সাধনের পন্থা হচ্ছে বল প্রয়োগ। কিন্তু সমাজ স্বেচ্ছাসেবক মূলক ব্যবস্থা বা পরিবর্তনমূলক পদ্ধতি আলোচনা করে তার উদ্দেশ্য সাধন করে। 

রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করতে পারে ও আইনের মাধ্যমে আইন ভঙ্গ করলে তাকে শাস্তি প্রদান করতে পারে। কিন্তু সমাজ আইন প্রণয়ন করতে পারে না। 

পরিশেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে উপযুক্ত দৃষ্টিকোণ থেকে পার্থক্য থাকলেও তারা পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। সমাজের ওপর যেমন রাষ্ট্রের প্রভাব থাকে তেমনই সমাজ ও রাষ্ট্রকে প্রভাবিত করে।

রাষ্ট্র

রাষ্ট্র বলতে এমন এক রাজনৈতিক সংগঠনকে বোঝায় যা কোন একটি ভৌগোলিক এলাকা এবং তৎসংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সার্বভৌম ক্ষমতা রাখে। রাষ্ট্র সাধারণত একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ভৌগোলিক সীমার ভেতর বসবাসকারী সমাজের সদস্যদের শাসনের জন্য নিয়ম কানুন তৈরি করে। যদিও একথা ঠিক যে রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাওয়া না পাওয়া বহুলাংশে নির্ভর করে, রাষ্ট্র হিসেবে তার উপর প্রভাব রাখা ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির উপর।

ম্যাক্স ওয়েবারের প্রভাববিস্তারী সঙ্গানুযায়ী রাষ্ট্র হচ্ছে এমন এক সংগঠন যা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে আইনানুগ বলপ্রয়োগের সব মাধ্যমের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রাখে, যাদের মধ্যে রয়েছে সশস্ত্রবাহিনী, নাগরিক, সমাজ, আমলাতন্ত্র, আদালত এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়ে মতভিন্নতার কারণে তাত্ত্বিক মহলে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এই আলোচনাকে কেন্দ্র করে যে ঠিক কীভাবে একটি সার্থক রাষ্ট্র এর অভ্যুদয়কে সমর্থন করা যেতে পারে।

সমাজ

সমাজ বলতে মূলত এমন এক ব্যবস্থা বোঝায়, যেখানে একাধিক চরিত্র একত্রে কিছু নিয়ম কানুন প্রতিষ্ঠা করে একত্রে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলে। মানুষের ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি একত্র হয়ে লিখিত কিংবা অলিখিত নিয়ম কানুন তৈরি করে; এরকম একত্র বসবাসের অবস্থাকে সমাজ বলে। মানুষ ছাড়াও ইতর প্রাণীর ক্ষেত্রে সমাজের অস্তিত্ব দেখা যায়, তবে সেখানে মানুষের মতো কাঠামোবদ্ধ সমাজের দৃষ্টান্ত নজরে আসে না। সমাজের দুটো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ট্যাবু বা নিষিদ্ধ আচার, ও টোট্যাম। সমাজের মধ্যে যেমন সদস্যদের মধ্যে থাকে পরস্পর সৌহার্দ্য, সহযোগিতা, মমত্ব তেমনি তৈরি হতে পারে ঘৃণা, লোভ, জিঘাংসা। তাই সমাজের মধ্যে শৃংখলা ধরে রাখার স্বার্থে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অলিখিতভাবে তৈরি হয় কিছু নিয়ম, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যার লঙ্ঘন চরম অসম্মানজনক, এবং সমাজের দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য। তবে নিঃসন্দেহে সুন্দর ও সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থার জন্য সৌহার্দ্য, সহযোগিতা একান্ত দরকার।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url