যাকাত ও ফেতরার মধ্যে পার্থক্য কি

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে যাকাত ও ফেতরার মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন যাকাত ও ফেতরার মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন যাকাত ও ফেতরার মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক যাকাত ও ফেতরার মধ্যে পার্থক্য কি।

আমাদের বিশ্ব, সাধারন প্রশ্ন উত্তর, নতুন বিশ্ব, অজানা তথ্য, আজকের বিশ্ব, সাধারন জ্ঞান, জেনারেল নলেজ, কুইজ, ধাঁধা, এমসিকিউ, আইকিউ, বিসিএস প্রিলিমিনারি,

যাকাত ও ফেতরার মধ্যে পার্থক্য কি

যাকাত আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আয়কর নয় কিংবা  গরিবের প্রতি দয়ার দানও নয়। এটা ধনীর সম্পদে গরিবের অধিকার যা আল্লাহ বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। যাকাত  দিলে দাতার অর্থ সম্পদ এবং তার নিজের আত্মা পবিত্র পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। 

ফিতরাও এক ধরনের যাকাত, একে সাদাকাতুল  ফিতরও বলা হয়। রমাদানুল মুবারকের শেষে ফিতরা ওয়াজিব হয়ে যায় শরীয়ত দ্বারা। নির্দিষ্ট করে দেওয়া  নির্দিষ্ট পরিমাণ ধন সম্পদের অধিকারীর ওপর অর্থাৎ সাহিবে নিসাবের ওপর।

যাকাতের নিসাব ও ফিতরার  নিসাব সমান হলেও ধন সম্পদের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। যাকাতের ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ ধন সম্পদ পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী হলে সেই সাহিবে নিসাবের ওপরে যাকাত বাধ্যতামূলক হয়ে যায় শতকরা  আড়াই ভাগ হিসাব করে যাকাত দেওয়া, কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী  হবার প্রয়োজন হয় না বরং ঈদুল ফিতরের দিন সকালে নিসাব পরিমাণ ধন সম্পদের  অধিকারী হলেই তার ওপর ফিতরা ওয়াজিব হয়ে যায়।

নিসাবের পরিমাণ হচ্ছে সাড়ে সাত তোলা সোনা অর্থাৎ  ৮৭.৪৫ গ্রাম সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য অর্থাৎ ৫১২.১৫ রৌপ্য অথবা ওই পরিমাণ সোনা বা  রৌপ্যের দামের অর্থ অথবা সম্পদ। বর্তমানে যা প্রায় ৪৮  হাজার টাকার সমপরিমাণ সম্পদ। ফিতরার জন্য নির্ধারিত নিসাবের অধিকারীকে ফিতরার জন্য নির্ধারিত মাথাপিছু হিসেবে গরিব মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।

ফিতরার মাধ্যমে রমাদানের সিয়ামের মধ্যে যদি কোনো অনিচ্ছাকৃত ছোটখাটো ত্রুটিবিচ্যুতি হয়ে থাকে তার প্রায়শ্চিত্ত সঞ্চিত হয়। সাদকাতুল ফিতর  শুধু মাত্র রমজান মাসে রোজাদরদের ভুল ত্রুটি ইত্যাদির কাফ্ফারা হিসেবে দিতে হয়। আর যাকাত অর্জিত সম্পদের বাৎসরিক  হিসাবের ওপর নির্ধারিত হয়।

যাকাত

যাকাত হলো ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন , পূর্ণবয়স্ক মুসলমান নর নারীকে প্রতি বছর স্বীয় আয় ও  সম্পত্তির একটি নির্দিষ্ট অংশ , যদি তা ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত সীমা নিসাব পরিমাণ অতিক্রম করে তবে , গরীব দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে  যাকাত বলা হয়। সাধারণত নির্ধারিত সীমার অধিক সম্পত্তি হিজরি  ১ বছর ধরে থাকলে মোট সম্পত্তির ২.৫ শতাংশ বা ১/৪০ অংশ বিতরণ করতে হয়। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ্জ্ব এবং যাকাত শুধুমাত্র শর্তসাপেক্ষ যে, তা সম্পদশালীদের জন্য ফরয বা আবশ্যিক হয়। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে যাকাত শব্দের উল্লেখ এসেছে ৩২ বার। নামাজের পরে সবচেয়ে বেশি বার এটি উল্লেখ করা হয়েছে।

যাকাত এটি একটি আরবি শব্দ যার অর্থ পরিশুদ্ধকরণ, পবিত্র করা, বৃদ্ধি পাওয়া, বরকত হওয়া ইত্যাদি।

ফিতরা

ফিতরা বা ফেতরা  আরবী শব্দ, যা ইসলামে যাকাতুল ফিতরের যাকাত বা সাদাকাতুল ফিতর ফিতরের সদকা নামে পরিচিত। ফিতর বা ফাতুর বলতে  সকালের খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হয় যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভঙ্গ করেন।যাকাতুল ফিতর বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে রোজাদারদের  বিতরণ ক রা দানকে। রোজা বা উপবাস পালনের পর  সন্ধ্যায় ইফতার বা সকালের খাদ্য গ্রহণ করা হয়। সেজন্য রমজান  মাস শেষে এই দানকে যাকাতুল ফিতর বা সকাল‌ের আহারের যাকাত বলা হয়। নারী পুরুষ, স্বাধীন পরাধীন, শিশু বৃদ্ধ, ছোট বড় সকল মুসলিমের জন্য ফিতরা প্রদান করা ওয়াজিব।ইবনে উমর থেকে জানা যায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক স্বাধীন ক্রীতদাস, নারী পুরুষ, ছোট বড়  মুসলমানের যাকাতুল ফিতর এক সা পরিমাণ খেজুর বা যব ওয়াজিব করেছেন। তিনি লোকদের ঈদের নামাযে  বের হওয়ার পূর্বেই তা আদায় করার আদেশ দিয়েছেন।





Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url