শিয়া ও সুন্নি এর মধ্যে পার্থক্য কি
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে শিয়া ও সুন্নি এর মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন শিয়া ও সুন্নি এর মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন শিয়া ও সুন্নি এর মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক শিয়া ও সুন্নি এর মধ্যে পার্থক্য কি।
শিয়া ও সুন্নি এর মধ্যে পার্থক্য কি
ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোতে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে অমিলের চেয়ে মিলের সংখ্যাই বেশি। যেমন, শিয়া ও সুন্নি উভয় মাজহাবই এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহতে বিশ্বাসী।
শিয়াদের প্রধান ধারা বা ১২ ইমামি শিয়া মুসলমানরা মনে করেন রাসূল সা. র পর কে মুসলমানদের নেতা বা খলিফা হবেন তা তানসিসি বিষয়। অর্থাৎ মহান আল্লাহর নির্দেশে ও রাসূল সা. র ব্যাখ্যার মাধ্যমে খলিফা বা ইমাম নির্বাচিত হবেন। অন্যদিকে সুন্নি মুসলমানরা মনে করেন এই পদে কে বসবেন তা নির্বাচন বা বেছে নেয়াম মাধ্যমে নির্ধারণযোগ্য বিষয়।
সুন্নী মুসলমানরাও মনে করেন ইমাম মাহদী আ. সারা বিশ্বে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন এবং হযরত ঈসা আ হবেন তাঁর সহকারী বা সহযোগী। কিন্তু সুন্নি মুসলমানদের অনেকেই তাঁর জন্ম এখনও হয়নি বলে মনে করেন। সুন্নি মাজহাবের অন্যতম প্রধান ইমাম আবু হানিফা র. ও মালিকি মাজহাবের প্রধান মালিক ইবনে আনাস ছিলেন শিয়া মুসলমানদের ষষ্ঠ তম ইমাম হযরত জাফর সাদিক আ.র ছাত্র।
শিয়া
শিয়া ইসলাম, শিয়া মতবাদ বা আহলে তাশাইয়ু হলো ইসলামের দ্বিতীয় বৃহত্তম শাখা। এই মতবাদ অনুসারে ইসলামের পয়গম্বর মুহম্মদ সা. তাঁর চাচাতো ভাই ও জামাতা আলী ইবনে আবী তালিবকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত খলিফা ও পরবর্তী রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক নেতা ইমাম হিসেবে মনোনীত করে যান, বিশেষত গাদীর খুমের ভাষণে, কিন্তু সকীফায় মুহম্মদের অন্যান্য সাহাবা কর্তৃক অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলস্বরূপ আলীকে তাঁর ন্যায্য খিলাফত থেকে বঞ্চিত করা হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রাথমিকভাবে সুন্নি ইসলামের সঙ্গে বৈপরীত্য ধারণ করে। সুন্নি মুসলমানেরা বিশ্বাস করে যে, মুহম্মদ সা. এর মৃত্যুর পূর্বে কাউকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত ঘোষণা করে যাননি এবং তারা সকীফায় মুসলমানদের একটি প্রবীণ গোষ্ঠীর দ্বারা মনোনীত আবু বকরকে নবীপরবর্তী প্রথম ন্যায়নিষ্ঠ রাশিদুন খলিফা হিসেবে বিবেচনা করে।শিয়া ইসলামের অনুসারী ব্যক্তিকে শী ঈ বলে অভিহিত করা হয়।
সুন্নি
সুন্নি ইসলাম বা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা আহ হলো ইসলামের বৃহত্তম শাখা। বিশ্বের মুসলমানদের ৮৭ থেকে ৯০ ভাগ সুন্নি মতাবলম্বী। এর নামটি আরবি সুন্নাহ শব্দ থেকে এসেছে যা নবী মুহাম্মদের অনুকরণীয় জীবনাচারকে নির্দেশ করে।
সুন্নি ও শিয়া মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য মুহম্মদের স্থলাভিষেক সংক্রান্ত মতবিরোধের ফলে উদ্ভূত হয় এবং পরবর্তীকালে বিস্তৃত রাজনৈতিক তাৎপর্য তথা ধর্মতাত্ত্বিক ও আইনশাস্ত্রীয় মাত্রা অর্জন করে।সুন্নি ঐতিহ্য অনুসারে, মুহাম্মদ তার কোনো উত্তরসূরি মনোনীত করে যাননি এবং আবু বকর হলেন জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত নবীর স্থলাভিষিক্ত ও প্রথম ন্যায়নিষ্ঠ খলিফা। এটি শিয়া দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে বৈসাদৃশ্য ধারণ করে। শিয়া মুসলমানদের মতে মুহাম্মদ তার চাচাতো ভাই ও জামাতা আলী ইবনে আবী তালিবকে তার স্থলাভিষিক্ত হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
সুন্নি ইসলামের অনুসারীদের আরবিতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা আহ অর্থাৎ সুন্নত ও সম্প্রদায়ের লোক” এবং সংক্ষেপে আহলুস সুন্নাহ বলে অবিহিত করা হয়।