সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্য টি কোথায় অবস্থিত

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্য টি কোথায় অবস্থিত এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্য টি কোথায় অবস্থিত তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্য টি কোথায় অবস্থিত। চলুন জেনে নেয়া যাক সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্য টি কোথায় অবস্থিত।

আমাদের বিশ্ব, সাধারন প্রশ্ন উত্তর, নতুন বিশ্ব, অজানা তথ্য, আজকের বিশ্ব, সাধারন জ্ঞান, জেনারেল নলেজ, কুইজ, ধাঁধা, এমসিকিউ, আইকিউ, বিসিএস প্রিলিমিনারি,

সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্য টি কোথায় অবস্থিত

সাবাশ বাংলাদেশ হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত ভাস্কর্যগুলোর অন্যতম একটি। এটি বাংলাদেশের অন্যতম একটা বৃহৎ ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্যটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত। এর স্থপতি শিল্পী নিতুন কুণ্ডু।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার সবুজ চত্বরে মুক্তাঙ্গনের উত্তর পার্শ্বে 'সাবাশ বাংলাদেশ' ভাষ্কর্যটি অবস্থিত। এটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতীকী ভাস্কর্য।বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের যে প্রতীকি ভাস্কর্যগুলো রয়েছে তার মধ্যে প্রকাশভঙ্গীর সরলতা, গতিময়তা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার তেজস্বী প্রকাশ এবং নন্দনতাত্বিক দিক থেকে এই ভাস্কর্যটি অনবদ্য।সাবাশ বাংলাদেশ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতীকী ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ভাস্কর্য। স্বাধীনতার জ্বলন্ত প্রমাণকে ধরে রাখার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে স্মারক ভাস্কর্য সাবাশ বাংলাদেশ। ১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলনের সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র –শিক্ষক- কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বলিষ্ঠ সাহসী ভূমিকা ছিল। সে সময় এমন ঘটনার আবর্ত সৃষ্টি হয় যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলই তাতে জড়িয়ে পড়েন ও অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা শাহাদাৎবরণ করেন। এরপর ১৯৭১ সালের ২৫মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিশ্চিহ্ন করার যে ব্যর্থ প্রয়াসের সূচনা করে তাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও আক্রান্ত হয়। কয়েকদিনের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যে দল রাজশাহীতে সক্রিয় ছিল তা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অবশেষে স্থানীয় ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। রাজশাহী শহর তৎকালীন ই.পি.আর. নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি বিপুল অংশ শহরে প্রবেশ করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ঘাঁটি স্থাপন করে। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবপূর্ণ অবদান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তাদের বিতাড়িত করতে শাহাদৎবরণ করেন অধ্যাপক হবিবুর রহমান, অধ্যাপক সুখরঞ্জন সমাদ্দার, অধ্যাপক মীর আবদুল কাউয়ুম, কর্মকর্তা- কর্মচারী ও ছাত্র।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, শিল্পী নিতুন কুণ্ডু সাবাশ বাংলাদেশ ভাস্কর্যটি নির্র্মাণ করেছেন। আমাদের বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটির রং হচ্ছে লাল। এই বৈশিষ্ট্য রাখবার জন্য এই ভাস্কর্যটিতে লাল বেলে পাথর উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ভাস্কর্যে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতীক হিসেবে ২টি ফিগার রয়েছে। এর একটি রাইফেল ধরে প্রগত গতিময় হয়ে সামনের দিকে, আরেকটি সেই তুলনায় অনেকটা স্থিতিধিক। সে উল্লাস প্রকাশ করছে। একটি যুদ্ধে কেবল মাত্র রাইফেল নিয়ে যুদ্ধ করতে হয় তা নয়, সেখানে মাথাও ঠান্ডা রাখতে হয়। এই দুটোর যে গতির খেলা, সে গতির মধ্য দিয়ে বিশাল যুদ্ধের যে পরিকল্পনা বা প্রস্তুতির দিক একটি ফিগারে রয়েছে। আরেকটি ফিগারে ঝাপিয়ে পড়ে মাঠে যুদ্ধ করা। এই দুটো ফিগারের পিছনে যে সাদা মাটা জায়গাটি রয়েছে, এইটা বাংলাদেশের পতাকার প্রতীক। এই ভাস্কর্যের দুই পাশে বাঙালির জীবনযাত্রা বাউল গান, আমাদের অসম্প্রদায়িকতা প্রতীক। এটা আমাদের হাজার বছর বয়সের চেতনা বুঝাচ্ছে, বাঙ্গালির জাতিসত্তার বৈশিষ্ট্য বুঝাচ্ছে। আরেক পাশে মা তার সন্তানকে কোলে করে নিয়ে আছে, আরেকজন হতে পতাকা নিয়ে আছে। এই উল্লাসকেই স্বাধীনতার উল্লাস বুঝাচ্ছে। এই সবকিছু মিলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ক্যানভাসকে প্রতীকির মধ্য দিয়ে বুঝাচ্ছে।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক শিক্ষক-ছাত্র শহীদ হওয়ায় এর স্মৃতিকে চির অম্লান করে রাখার জন্য উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। তারপর নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ হয় সিনেট ভবনের দক্ষিণে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ১৯৯১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের উদ্যোগে শিল্পী নিতুন কুন্ডুর উপাস্থপনায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষে হলে এর ফলক উম্মোচন করেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। ভাস্কর্যে স্থান পেয়েছে তরুণ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার কয়েকটি লাইন। যা হলো

সাবাস বাংলাদেশ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয় জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়।

লেখক বায়েজিদ আহমেদ এর মতে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের যে প্রতীকী ভাস্কর্যগুলো রয়েছে তার মধ্যে প্রকাশভঙ্গির সরলতা, গতিময়তা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার তেজস্বী প্রকাশ ও নন্দনতাত্ত্বিক দিক থেকে এই ভাস্কর্যটি অনবদ্য।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url