বাস্তববাদ ও ভাববাদের মধ্যে পার্থক্য কি

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে বাস্তববাদ ও ভাববাদের মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন বাস্তববাদ ও ভাববাদের মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন বাস্তববাদ ও ভাববাদের মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক বাস্তববাদ ও ভাববাদের মধ্যে পার্থক্য কি।

আমাদের বিশ্ব, সাধারন প্রশ্ন উত্তর, নতুন বিশ্ব, অজানা তথ্য, আজকের বিশ্ব, সাধারন জ্ঞান, জেনারেল নলেজ, কুইজ, ধাঁধা, এমসিকিউ, আইকিউ, বিসিএস প্রিলিমিনারি,

বাস্তববাদ ও ভাববাদের মধ্যে পার্থক্য কি

জ্ঞানভিত্তিক মতবাদ হিসেবে বাস্তববাদ ও ভাববাদ  দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদ।  আন্তঃযুদ্ধ বছরগুলোর ভাববাদী চিন্তাধারার  প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রারম্ভিক বাস্তববাদের উদ্ভব। অন্যদিকে, আধুনিককালে পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস ভাববাদ পরিপূর্ণতা লাভ করে জজ  বার্কলীর আত্মগত ভাববাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।

বাস্তববাদীরা বস্তুর গুণাবলি বিচার বিশ্লেষণ করে গুণের আধাররূপেই বস্তুকে স্বীকার করে নেন। অন্যদিকে, ভাববাদীদের  মতে বস্তুর গুণাবলি ব্যক্তি মনের ধারণা ছাড়া কিছুই নয়।

বাস্তববাদীরা মনে করেন মূখ্য গুণ এবং গৌণ গুণ মিলেই বস্তু। বস্তুর  মূখ্য গুণ গুলো বস্তুগত, আর গৌণ গুণ গুলো ব্যক্তিগত। অন্যদিকে,  

ভাববাদীরা মনে করেন বস্তুর সব  ধরনের গুণই ব্যক্তি মন নির্ভর। জ্ঞেয় বস্তু মন-নিরপেক্ষ না মন সাপেক্ষ সত্তা, এটাই হচ্ছে বাস্তুবাদ ও ভাববাদের মূল বিতর্কের বিষয়। বাস্তববাদ অনুসারে জ্ঞেয় বস্তু মন নিরপেক্ষ সত্তা। যেমন  গাছ পালা, নদী নালা, পাহাড় পর্বত ইত্যাদির অস্তিত্ব মানুষের মনের ওপর নির্ভরশীল নয়। মানুষের মনের বাইরে এদের অস্তিত্ব  বিদ্যমান। অপরদিকে ভাববাদ অনুসারে, বস্তু হচ্ছে সত্তার জ্ঞান নির্ভর  অভবাস, জ্ঞানের অতিরিক্ত সত্তা নয়। কারণ বস্তুর অস্তিত্ব নির্ভর করে বস্তুকে জানার ওপর। আমরা কখনও আমাদের চিন্তার জগৎ  অতিক্রম করতে পারি না। সেজন্য বস্তুর অস্তিত্ব আমাদের চিন্তা বা জ্ঞানের  ওপর নির্ভর করে।

বাস্তববাদ :

বাস্তববাদ বা রাজনৈতিক বাস্তববাদ হলো এই পাঠের প্রারম্ভ থেকে তৈরি হওয়া একটি প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তত্ত্ব। এই তত্ত্ব থুসিডাইডিস, ম্যাকিয়াভেলি এবং হবস এর মত লেখকদের ধ্রুপদী চিন্তাধারার উপর নির্ভর করে। আন্তঃযুদ্ধ বছরগুলোর  ভাববাদী চিন্তাধারার প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রারম্ভিক বাস্তববাদের উদ্ভব। জ্ঞাতা ও জ্ঞেয় বস্তুর  স্বরূপ নির্ণয় করতে গিয়ে বাস্তববাদী দার্শনিকগণ বলেন, জ্ঞেয় বস্তুর মন নিরপেক্ষ স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে, যা কোনভাবেই  মনের উপর নির্ভরশীল নয়।

অর্থাৎ কোন বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার অর্থ এটা নয় যে, আমরা তাকে জানতে পারলাম বলেই তা সৃষ্টি হলো বরং প্রকৃত সত্য হলো বস্তুটি পূর্বেই অস্তিত্বশীল ছিল। জ্ঞাতার ন্যায় জ্ঞেয় বস্তুরও স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রয়েছে। তাই সকল বাস্তববাদী স্বীকার করেন যে, বস্তুর জ্ঞান নিরপেক্ষ বা  মন নিরপেক্ষ নিজস্ব অস্তিত্ব রয়েছে, জ্ঞানের সাথে যার কোন অভ্যন্তরীণ  সম্পর্ক নেই।

ভাববাদ :

ভাববাদ বাস্তববাদের বিপরীতধর্মী একটি  দর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গি তবে তা নতুন কোন মতবাদ নয় বরং অতি প্রাচীন। অনেকে ভাববাদ  শব্দটিকে আদর্শবাদী বলে মনে করেন। কিন্তু  শব্দটির দার্শনিক অর্থ আদর্শ নয় বরং ধারণা। প্রাচীন গ্রীসের দার্শনিক  প্লেটো  ভাববাদের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেন। তাঁর মতে, যথার্থ জ্ঞান সার্বিক বা সাধারণ ধারণা, বিশেষ বিশেষ বস্তুর  প্রকৃত কোন সত্তা নেই, কেবল সার্বিকেরই অস্তিত্ব আছে। প্লেটো এই সার্বিকেরই নাম দিয়েছেন ধারণা। আধুনিককালে পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস ভাববাদ পরিপূর্ণতা লাভ করে জজ বার্কলীর আত্মগত  ভাববাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।

অন্যান্য ভাববাদীরা হচ্ছেন জার্মানের দার্শনিক ইমানুয়েল  কান্ট, জে. জি. ফিখটে, শেলিং ও জজ উইলহেলম হেগেল। অন্যদিকে ব্রিটেনের ব্রাডলী ও ইটালীতে বিনিডেটো  ক্রুসি প্রমুখ। তবে ভাববাদী দার্শনিকগণের মধে্য কিছু বিষয়ে সাদৃশ্য থাকলেও বৈসাদৃশ্য ও গরমিলও  লক্ষ্য করা যায়। তাই এটি একটি জটিল  মতবাদ।





Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url