জাতি ও জাতীয়তার মধ্যে পার্থক্য কি
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে জাতি ও জাতীয়তার মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন জাতি ও জাতীয়তার মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন জাতি ও জাতীয়তার মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক জাতি ও জাতীয়তার মধ্যে পার্থক্য কি।
জাতি ও জাতীয়তার মধ্যে পার্থক্য কি
জাতি বলতে কতগুলো মানুষের সমষ্টিকে বুঝায় যারা রাজনৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ স্বাধীন বা স্বাধীনতা লাভে আগ্রহী । একই ভাষা, বংশ, ধর্ম, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, আশা ও আকাঙ্ক্ষা এবং ভৌগোলিক এলাকার ঐক্যসূত্রে আবদ্ধকে জাতীয়তা বলে। জাতি হচ্ছে একটি বাস্তব ও সক্রিয় ধারণা। জাতীয়তা হলো একটি মানসিক অনুভূতি।
বিশেষ কতকগুলো চেতনার সমন্বিত রূপের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া যা জাতির অস্তিত্বকে স্থায়িত্ব প্রদানে সহায়তা করে । জাতীয়তা হলো এসব চেতনার প্রাথমিক অবস্থা। প্লেটো , অ্যারিস্টটল জাতি সম্পর্কে যে ধারণা প্রদান করেন তা বেশ প্রাচীন । জাতীয়তার উৎপত্তি আধুনিক কালে। ম্যাকিয়াভেলির হাতে প্রথম জাতীয় ধারণার উৎপত্তি হয়।
জাতি
জাতি হচ্ছে একটি সম্প্রদায় যা একটি সাধারণ ভাষা , অঞ্চল, ইতিহাস , জাতীয়তা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। স্পষ্টতই, জাতি উপজাতি হতে অধিক রাজনৈতিক।সাধারণভাবে একে বলা যায়, জাতি হচ্ছে একত্রিত ও প্রতিষ্ঠিত উপজাতি সম্প্রদায়। কিছু জাতি উপজাতি গোষ্ঠীর সমান বলে বিবেচ্য আবার কিছু জাতি গড়ে ওঠে সামাজিক ও রাজনৈতিক কিছু নির্দিষ্ট সংবিধান অনুসরণ করে। জাতির অন্য একটি সংজ্ঞা হচ্ছে, এটি একটি সম্প্রদায়, যে সম্প্রদায়ের জনগণ নিজেদের স্বায়ত্তশাসন, ঐক্য ও অন্যান্য অধিকারের ব্যাপারে সচেতন। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, একটি জাতি হলো একটি ভূ খন্ডের স্বাধীন ও সার্বভৌম অঞ্চল। আমেরিকান রাজনৈতিক বিজ্ঞানী বেনেডিক্ট এন্ডারসন জাতিকে একটি কাল্পনিক সম্প্রদায় হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আর অস্ট্রেলিয়ান পণ্ডিত পল জেমস জাতিকে কোনো একটি সম্প্রদায়ের খন্ড হিসেবে দেখেন।
জাতীয়তা
জাতীয়তা হচ্ছে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রের মধ্যে আইনগত সম্পর্ক। জাতীয়তা রাষ্ট্রকে কোনো ব্যক্তির উপর আইনগত অধিকার এনে দেয় এবং ব্যক্তিকে এনে দেয় রাষ্ট্রের সুরক্ষা । এসব অধিকার এবং দায়িত্ব কি তার তারতম্য ঘটে রাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রে। আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইন এবং আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী, এটি প্রত্যেক রাষ্ট্রের অধিকার যা নির্ধারণ করে কারা সেই রাষ্ট্রের নাগরিক হবে। এই নির্দেশকগুলো জাতীয়তা আইনের অংশ। কিছু ক্ষেত্রে জাতীয়তার নির্দেশকগুলোও নিয়ন্ত্রিত হয় সরকারী আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা। উদাহরনস্বরূপ, রাষ্ট্রহীনতার উপর চুক্তিপত্র এবং জাতীয়তা বিষয়ক ইউরোপীয় সম্মেলন।
জাতীয়তা , নাগরিকতা থেকে কারিগরি এবং আইনগত ভাবে পৃথক, যা বাক্তি এবং দেশের মধ্যে পৃথক ধরনের আইনগত সম্পর্ক । জাতীয়তা বিশেষ্য পদটি নাগরিক এবং অনাগরিক উভয়কেই বোঝাতে পারে । নাগরিকের সবচেয়ে সাধারণ পার্থক্যকারি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নাগরিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক জীবনে অংশগ্রহণ করতে পারে, যেমন ভোট দেয়ার মাধ্যমে অথবা নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করে। আধুনিক দেশে সকল মানুষই রাষ্ট্রের নাগরিক এবং পূর্ণ নাগরিকরা রাষ্ট্রের বাধ্যগত। জাতীয়তার এই সংজ্ঞাটি রাজনৈতিক সীমানা বা পাসপোর্ট মালিকানার ভিত্তিতে দেয়া হয়নি এবং যেসব জাতির স্বাধীন রাষ্ট্র নেই যেমন স্কট, ওয়েলস, ইংলিশ, কুরদ, তামিল, শিখ ইত্যাদি তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করে।