বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কি
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কি।
বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কি
বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসা এই দুটি শব্দের মধ্যে অনেক পার্থক্য । বাস্তবিক ভাবে বন্ধুত্ব নির্ভর করে আন্তরিকতার উপর আর ভালোবাসা নির্ভর করে আত্মবিশ্বাসের উপর। আর বন্ধু মানে কাছের একজন মানুষ। যার সাথে সুখ দুঃখ এমন কি ভালবাসার মানুষের সাথে একটু মনমালিন্য হলে সে কথা গুলো বন্ধুর সাথে অনায়াসে শেয়ার করা যায়। যা অন্য কারো সাথে করা যায় না। মানুষের জীবনে এমনও কিছু ঘটনা ঘটে । এমন কিছু কথা আছে যা কাউকে বলা যায় না এমন কি জীবন সাথীকেও না কিন্তু বন্ধুর সাথে শেয়ার করা যায় ।অনেকে বলে থাকেন বন্ধুত্ব ক্রমশ পরিবর্তিত হয়ে ভালোবাসায় উপনীত হতে পারে, কিন্তু ভালোবাসা নেমে অবশেষে বন্ধুত্বে এসে ঠেকতে পারে না। একবার যাকে ভালোবেসেছি , হয় তাহকে ভালোবাসবো নয় ভালোবাসবো না; কিন্তু একবার যার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে , ক্রমে তার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপিত হতে আটক নেই। অর্থাৎ বন্ধুত্বের উঠবার নামবার স্থান আছে। কারণ, সে সমস্ত স্থান আটক করা থাকে না । কিন্তু ভালোবাসার উন্নতি অবনতির স্থান নেই। যখন সে থাকে তখন সে সমস্ত স্থান জুড়ে থাকে , নয় সে থাকে না। আপনি আপনার বন্ধু হিসেবে অনেককেই নির্বাচন করতে পারবেন কিন্তু ভালবাসার মানুষ হিসেবে বেছে নিতে হবে একজনকেই।
বন্ধুত্ব
বন্ধুত্ব হলো মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশেষ সম্পর্ক। আত্মার শক্তিশালী বন্ধন হলো বন্ধুত্ব। ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস ডেটাবেজ গবেষণায় দেখা গেছে যে , ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কারণে মানুষ সুখী হয়।স্থায়ী বন্ধুত্বের কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকে যেমন স্নেহ, সহানুভূতি, সহমর্মিতা, সততা, স্বার্থপরতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সমবেদনা, একে অপরের সঙ্গ, আস্থা, নিজের যোগ্যতা, অনুভূতি প্রকাশ প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত।একে অন্যের সুখে খুশিতে লাফিয়ে ওঠার; একে অন্যের দুঃখে পাশে দাঁড়ানোর। মন খুলে কথা বলা, হেসে গড়াগড়ি খাওয়া আর চূড়ান্ত পাগলামি করার একমাত্র আধার এ বন্ধুত্ব । বন্ধুত্ব কোনো বয়স মেনে হয় না, ছোট-বড় সবাই বন্ধু হতে পারে। তবে বন্ধুত্বের মধ্যে যে জিনিসটা অবশ্যই থাকা চাই তা হলো ভালোবাসা। বন্ধু এ শব্দের মাঝেই সব লুকায়িত এতে কোন বয়স বাধা নয়। কিশোর বয়সের কোন ছেলে বা মেয়ের সাথে যদি তার চেয়ে বড় কারো সাথে বন্ধুত্ব হয় তবে তা তাকে জ্ঞানের পরিসীমা বাড়াতে বিরাট ভূমিকা রাখে। তবে তার জন্য প্রয়োজন পরস্পরের প্রতি বিশেষ যত্ন। আমাদের পিতা মাতা আমাদের সব থেকে আপন বা কাছের মানুষ হলেও অনেক বিষয় আমরা তাদের সাথে বলতে পারিনা। কিন্তু বন্ধুর সাথে অকপটে সব ভালো মন্দ যত খারপ হোক র্নিদ্বিধায় বলা যায় , আর সেটার নামই প্রকৃত বন্ধু।
ভালোবাসা
যে সম্পর্কে সততা, বিশ্বাস, সম্মান, দায়িত্ব, স্নেহ রয়েছে সেই সম্পর্কের নামই হয়তো ভালোবাসা।একটা সম্পর্কের মূল ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। বিশ্বাস থেকে মানুষের সম্মান আসে এর থেকে মানুষের মন জয় করে। প্রেমের কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। প্রেম এক প্রকার মোহ কিন্তু ভালোবাসা কোন মোহ নয়।
ভালোবাসা একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা।বিশেষ কোন মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ভালোবাসা।ভালোবাসাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করা যায়। যেমন একজন মায়ের ভালোবাসা একজন সঙ্গীর ভালবাসা থেকে আলাদা, যা আবার খাবারের প্রতি ভালবাসা থেকে ভিন্ন। সাধারণত, ভালোবাসা বলতে একটি তীব্র আকর্ষণ এবং মানসিক সংযুক্তির অনুভূতিকে বোঝায়।ভালোবাসাকে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয়ই মনে করা হয়। এর গুণগুলো মানুষের উদারতা, সহানুভূতি এবং স্নেহের প্রতিনিধিত্ব করে যেমন অন্যের ভালোর জন্য নিঃস্বার্থ থাকা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করা।কারো প্রতি অতিরিক্ত যত্নশীলতা কিংবা প্রতিক্ষেত্রে কারো উপস্থিতি অনুভব করা ভালোবাসার সাথেই সম্পর্কযুক্ত। অধিকাংশ প্রচলিত ধারণায় ভালোবাসা, নিঃস্বার্থতা, স্বার্থপরতা, বন্ধুত্ব, মিলন, পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত।ভালোবাসার সাধারণ এবং বিপরীত ধারণার তুলনা করে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভালোবাসাকে জটিলভাবে বিচার করা যায়। ধনাত্মক অনুভূতির কথা বিবেচনা করে ভালোবাসাকে ঘৃণার বিপরীতে স্থান দেওয়া যায়। ভালোবাসায় যৌনকামনা কিংবা শারীরিক লিপ্সা অপেক্ষাকৃত গৌণ বিষয়। এখানে মানবিক আবেগটাই বেশি গুরুত্ব বহন করে। কল্পনাবিলাসিতার একটি বিশেষ ক্ষেত্র হচ্ছে এই ভালোবাসা।