ট্রয় নগরী কোথায় অবস্থিত

আমাদের নানান বিষয়ে নানান ধরনের জায়গা সম্পর্কে জানার খুবই আগ্রহ থাকে। সে সব আগ্রহ থেকেই আমরা নানান ধরনের জিনিসের খোঁজ করে থাকি। অধিকাংশ মানুষের নতুন নতুন ইতিহাস নতুন নতুন বিষয় জানতে ভালো লাগে। যার কারনে তারা নতুন নতুন জিনিসের খোঁজ করে থাকে। এ সকল জিনিসগুলোর মধ্যে মানুষ টয় নগরী কোথায় অবস্থিত এটি খোঁজে থাকে। প্রিয় পাঠকগণ ট্রয় নগরী কোথায় অবস্থিত সে সম্পর্কে জানার জন্য আপনারা অনেকেই ইতিমধ্যে নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব টয় নগরী কোথায় এবং এর সম্পর্কে বিস্তারিত। 

ট্রয় নগরী কি

ট্রয় নগরী বর্তমান তুরস্কের উত্তর-পশ্চিম অংশে, ধর্দানেলস প্রণালীর কাছে অবস্থিত। ১৯শ শতাব্দীতে হাইনরিখ শ্লিমানের খননের মাধ্যমে ট্রয়ের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়, যা বিভিন্ন স্তরের শহরগঠনের ইঙ্গিত দেয়। হোমারের "ইলিয়াড" অনুযায়ী, ট্রয় যুদ্ধের কেন্দ্রীয় স্থান ছিল ট্রয় নগরী। এটি প্রাচীনকালে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। ট্রয় নগরী প্রাচীন গ্রিক, রোমান, এবং বাইজেন্টাইন সংস্কৃতির মিশ্রণ বহন করে এবং এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। ট্রয় বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, যেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

ট্রয় নগরী কেন বিখ্যাত

ট্রয় নগরী হোমারের মহাকাব্য "ইলিয়াড" এর জন্য বিখ্যাত, যেখানে ট্রয় যুদ্ধের বর্ণনা করা হয়েছে। গ্রিক ও ট্রোজানদের মধ্যে সংঘটিত ট্রোজান যুদ্ধের কারণে ট্রয় বিশেষভাবে পরিচিত। এই যুদ্ধের কিংবদন্তী ট্রোজান ঘোড়ার কাহিনীও উল্লেখযোগ্য। ১৯শ শতাব্দীতে হাইনরিখ শ্লিমানের খননের মাধ্যমে ট্রয়ের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়। ট্রয় নগরী প্রাচীন গ্রিক, রোমান ও বাইজেন্টাইন সংস্কৃতির সংমিশ্রণে সমৃদ্ধ। ট্রয় নগরী এভাবে ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব এবং সাহিত্যিক ঐতিহ্যের মিশ্রণে এক অনন্য স্থান হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।

ট্রয় নগরী কোথায় অবস্থিত 

বর্তমানের চেয়ে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের নাম। হোমারের ইলিয়াডে যে ট্রায়ের উল্লেখ রয়েছে সেটিকেই এখন ট্রয় নামে আখ্যায়িত করা হয়। এর অবস্থান আনাতোলিয়া অঞ্চলে হিসারলিক নামক স্থানে। ট্রয়ের তুর্কির নাম ক্রভা। অর্থাৎ আধুনিক হিসাবলিক সেই প্রাচীন ট্রয় নগরী এর ভৌগলিক অবস্থান তুরস্কের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে কানাক্কাল প্রদেশের সমুদ্র সৈকতের নিকটে এবং আইডি পর্বতের নিচে দার্দানেলিসের দক্ষিণ পশ্চিমে 

রোমান সম্রাট অগাস্টাসের রাজত্বকালে প্রাচীন ট্রয় নগরীর ধ্বংসস্তূপের উপর ইলিয়াম নামের নতুন একটি শহর নির্মিত হয়। কনস্টান্টিনোপল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ইলিয়াম বিকশিত হয়েছে,কিন্তু বাইজান্টাইন রাজত্বের ধীরে ধীরে এর পতন হতে থাকে। ১৮৬৫ সালে ফ্রানক কার্লভাট ইংরেজ প্রত্নতাত্ত্ববিদ সরবপ্রথম ট্রয় নগরীর সন্ধান পান। হিসালিকে এক কৃষকের কাছ থেকে এক খন্ড জমি কিনেন খনন কাজ শুরু করেন।কিন্তু তা সমাপ্ত করতে পারেননি। 

১৮৭০ সালে জার্মানে প্রত্নতাত্ত্ববিদ হাইনরিশ শ্লিমান এই এলাকায় খনন কাজ শুরু করেন। এই খনন চলতে থাকায় এক সময় প্রমাণিত হয় যে এখানে একের পর এক বেশ কয়েকটি শহর নির্মিত হয়েছিল। সম্ভবত এই শহরগুলোরই একটি হোমারের ট্রয় ৭ অবশ্যই নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু এটা প্রায় নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে হিত্তীয় ও রচনা উল্লেখিত উইলুসা শহরটি এখানে অবস্থিত ছিল। অনেকেই মনে করেন ইলিয়ন এই উইলসা নামেই গ্রিক সংস্করণ। ১৯৯৮ সালের নামক এই প্রত্নতাত্ত্বিক দর্শনীয় ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় যুক্ত হয়। 

ট্রয় নগরী ধ্বংসের ইতিহাস 

ট্রয় নগরের সাথে মহাবীর হেক্টরের বীরত্ব আত্মত্যাগের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। সুন্দরী হেলেন কে কেন্দ্র করে সংঘটিত এই যুদ্ধে হেক্টর কে পরাস্ত করে গ্রিকরা ট্রয় নগরীর দখল করে আগুন ধরিয়ে দেন। ট্রয় গ্রীসে অবস্থিত বলে কেউ কেউ বলে থাকেন । তথ্যটি সঠিক নয় নগরটি তুরস্কের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে কান্নাকাল প্রদেশের নিকটে অবস্থিত। 

প্রাচীন এশিয়া মাইনরে বর্তমানে তুরস্কের আনাতোলিয়া রাজ্য ছিল ট্রয় নামক এক নগরী। এই ঐতিহাসিক ট্রয় নগরীর রাজা ছিলেন প্রিয়ামএবং রানী ছিলেন হেকবা। তাদের আদরের পুত্রের নাম ছিল প্যারিস। এই প্যারিস ছিল মূলত ট্রয় যুদ্ধের পিছনে মূল হোতা। রাজপুত্র প্যারিস গ্রিসের স্পার্টা রাজ্যের রাজা মেনেলাস স্ত্রী হেলেনের প্রেমে পড়ে যান। তারপর তিনি হেলেন কে নিয়ে তরে পালিয়ে আসেন। এর ফলে শুরু হয় স্পার্টা আর ট্রয়ের মধ্যকার সেই যুদ্ধ এই কাহিনী এতোটাই চমকপ্রদ এবং রোমাঞ্চকর যে গ্রিক সাহিত্যি এবং রোমান সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে ট্রয়ের যুদ্ধ। আপনারা নিশ্চয়ই মহাকবি হোমারের নাম শুনেছেন। তার দুটো মহাকাব্য ইলিয়াড এবং ওডিসির কারণে এই রোমান্টিক ট্রাজেরি অমর হইয়াছে।তবে হোমারের লেখায় মূলত ফুটে উঠেছে প্যারিস আর হেলেনের ভালোবাসার কাহিনী। হেলেন প্যারিস এতটাই ভালবেসে ফেলেছিল যে স্বামী মেরেলাসকে আর স্পার্টা রাজপ্রাসাদ ছেড়ে যেতে বাধিনি তার। তাইতো সে নগরীর রাজপুত্রের সাথে পালিয়ে যায়। কিন্তু এমন শক্তিশালী রাজ্যের রানী আরেকজনের হাত ধরে পালিয়ে যাবে, আর রাজা বসে বসে দেখবে তা তো হয় না তাই মেনেলাস তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ট্রয় বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেবে পড়লেন। প্রায় ১০ বছর স্থায়ী ছিল সেই যুদ্ধ। এর ফল স্বরূপ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ঐতিহাসিক ট্রয় নগরী

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url