রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায়

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, আজকের এই টিউটোরিয়ালে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, আপনি যদি রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় এই বিষয়ে না জানেন তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য যার মাধ্যমে আপনি রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় এবং রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জানতে পারবেন। 

রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায়

বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা থেকে ২ শত কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলায় অন্তর্গত পাকশী ইউনিয়নে রুপপুর গ্রামে নির্মিত হচ্ছে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি পদ্মা নদীর উপরে নির্মিত হাডিঞ্জ ব্রীজ ও লালন শাহ সেতুর পাশে নদীর তীরে অবস্থিত। এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যার প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রাশিয়ার রোসটোম স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্মিত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে অনেকের মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন জাগেছে।রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত সেই সম্পর্কে অনেকেরই সুস্পষ্ট ধারণা নেই। যেহেতু বাংলাদেশের এটি সর্বপ্রথম স্থাপনা। বাংলাদেশের জন্য  রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র খুবই সাফল্যের একটি বিষয়। যখনই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে তখন বাংলাদেশের বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবে না বললেই চলে। এই বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা। তাই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কি সরকারি

১৯৬১ সালে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৯৬২ সালে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার পদ্মা নদীর পার্শ্ববর্তী রূপপুরকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। একাধিক পরীক্ষার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প যথাযত যাচাই করা হয়। এ প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৬৯ সালে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাতিল করে দেয় । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সরকার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন হয়েছিল ২০০৯ সালে। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কত মেগাওয়াট

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র কে দুটি ইউনিটি ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম ২০২৩ সালের শেষের দিকে অথবা ২০২৪ সালের শুরুর দিকে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার কথা হয়েছে। যখনই পুরোপুরি ভাবে দুটি ইউনিটির বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হবে তখন ২৪০০মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে । যা দেশের জন্য অত্যন্ত সুফল বয়ে আনবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি কি

এই প্রকল্পে প্রায় ১ লক্ষ ১৩০০ কোটি টাকা বাজেট করা হয়েছে। অন্যান্য সকল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি অনেক কম লাগে। এবং কম জ্বালানিতে অধিক পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়। এছাড়াও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি কম লাগে বিধায় অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে এটি সহজলভ্য। তাই কম খরচে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অধিক কার্যকরী। বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক প্রযুক্তির সর্বাধিক নিরাপত্তা ও পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি। বিশ্বের মোট বিদ্যুৎ চাহিদা ১০ ভাগ আসে পারমাণবিক প্রযুক্তি খাত থেকে। বাংলাদেশের ও বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশের মতো ক্রমবধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য স্বল্প মূল্যে উৎপাদিত পরিবেশ বান্ধব এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার প্রায়সে পাবনা জেলায় রূপপুরে দুই ইউনিট বিশিষ্ট পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করেছে। প্রতিটি ইউনিটে প্রায় ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করবে। রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কাজ শেষ হলে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ৩৪ তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের দেশ। আর এই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থায়িত্ব হবে ১০০ বছর।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url