জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত 

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম, আজকের এই টিউটোরিয়ালে জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, আপনি যদি জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত এই বিষয়ে না জানেন তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য যার মাধ্যমে আপনি জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত  এবং জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জানতে পারবেন। 

জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত 

জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় জাপানের টোকিওতে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়টি ৬ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । তবে জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। ১৯৪৫ সালে ২৪ শে অক্টোবর জাতীয় সংঘ গঠিত হয়। জাতিসংঘ রাতারাতি প্রতিষ্ঠিত হয়নি।১১ সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের ৫ টি সদস্য যেমন যুক্তরাষ্ট্,  যুক্তরাজ্,  ফ্রান্স, রাশিয়,  ও চীন এর বিশেষ ক্ষমতা veto power রয়েছে যে ক্ষমতার বলে এই পাঁচ সদস্যের যে কেউ জাতীসংঘের যে কোন সিদ্ধান্তকে নাকচ করে দিতে পারে।


প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক ইতিহাস 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লিগ নেশন্স তৈরি হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে সেটি বিশ্বরক্ষা করতে ব্যর্থতা এবং বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা প্রেক্ষাপটই জাতিসংঘের মতো সংস্থার ভিত্তি রচনা করেছিল। তবে যুদ্ধ থেকে বিশ্বকে রক্ষা আর সার্বভৌম দেশগুলোর মধ্যে সমতামূলক নিরাপত্তা আদর্শিক ভাবনা থাকে জাতিসংঘের জন্ম হলেও সংস্থাটির জন্মের পরেও অনেকগুলো যুদ্ধ দেখেছে বিশ্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কে অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেছেন যুদ্ধের ইতিহাসে পূর্ণ ভিত্তিক ঠেকাতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের  বাস্তবতার জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি যুদ্ধ ঠেকাতে পারেনি এটা ঠিক কিন্তু বৈশ্বিক মানবাধিকার ও মানবিক কার্যক্রমে বেশ ভালো ভূমিকা রেখেছে বিবিসি বাংলা কে বলেছিলেন তিনি।


তবে বিশ্লেষকরা যাই বলুক বাস্তবতা হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বড় কোন সংকট সেটি সিরিয়া কিংবা ইরাক কিংবা রোহিঙ্গা যাই হোক না কেন প্রভাবশালী দেশগুলোর বাহিরে গিয়ে এসব বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়া আর কিছু প্রস্তাব পাস করা ছাড়া তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা জাতিসংঘ দিখাতে পারেনি। আবার অনেক ক্ষেত্রে জাতিসংঘ সব সিদ্ধান্ত পাশ করেছে তাকে গুরুত্ব দেয়নি প্রভাবশালী দেশগুলো। সিরিয়াল লিবিয়া ইরাক কিংবা  সোমালিয়ার জাতিসংঘকে কেবল ব্যবহার করেছে কিংবা অপেক্ষা করেছে বিশ্বশক্তি গুলো। এমনকি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে জাতিসংঘ অনেক তৎপরতা দেখালেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোন অগ্রগতির হয়নি কার্যত কিছু প্রভাবশালী দেশের কারণেই।


কিভাবে তৈরি হয়েছিল জাতিসংঘ 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের জাতিসংঘের জন্ম হলেও এটি প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর গঠিত লিগ অব নেশন্স ব্যর্থতার কারণেই।১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বনেতাদের একাধিক বৈঠক ও সম্মেলনে তাই নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিলো।জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে অবশ্য বলা হয়েছে জাতিসংঘের ইতিহাসে এখনো লেখা হচ্ছে, যার যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৪৫ সালে। মূলত এর সনদ চীন সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র  এবং সিগনেটরি দেশগুলোর বেশিরভাগ অনুমোদনের পর যাত্রা শুরু হয়।


তবে সব মিলিয়ে মূল সনদে ৫১ টি দেশ স্বাক্ষর করলেও এখনো এর সদস্য সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের সেট ডিপার্টমেন্ট অফিস অফ দ্যা হিস্টোরিয়াম জাতিসংঘ গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে লিখেছেন যে ১৯৪২ সালের পহেলা জানুয়ারি জার্মানি ইতালি জোটের সাথে যুদ্বরত ২৬ টি জাতির প্রতিনিধিরা ওয়াশিংটনের সমবেত হন জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরের জন্য এবং এর মাধ্যমে তারা আটলান্টিক চাটার অনুমোদন করেন। আটলান্টিক চার্টার  হল মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের একটি যৌথ ঘোষণা পত্র। ১৯৪১ সালের ১৪ই আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক লিন ডি রুজভেল্ট ও  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চাচিলের বৈঠকের  পর এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছিল। 


তারা মূলত বৈঠকে বসেছিলেন বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী একটি আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া দাঁড় করানোর উদ্দেশ্য। এই চার্টারে আটটি নীতির সন্নিবেশ করা হয়েছিল দেশ দুটির অঙ্গীকারের ভিত্তিতে। যুদ্ধের সময় যেসব দেশকে নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়েছিল তাদের নিজস্ব সরকার গঠনে প্রক্রিয়াকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি সব মানুষকে নিজের সরকার পদ্ধতি নিজেকে ঠিক করার বিষয়ে সমর্থন জোগাতে দেশ দুটি একমত হয়েছিল এই সনদে । 


জাতিসংঘে বাংলাদেশ 

বাংলাদেশ জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করে ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ১৩৬ তম সদস্য হিসেবে। জাতিসংঘের যোগদানের এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে ২৫শে সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন। 

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ 

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ কাজ শুরু করে ১৯৮৮ সাল থেকে। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা ইরাক লিভিয়ার দুটি মিশনে অংশ নেয।  বাংলাদেশ আর্মি এ পর্যন্ত বিশ্বের ২৫ টি দেশে জাতিসংঘের ৩০ টি মিশনে অংশ নিয়েছে। জাতিসংঘের  শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ অংশগ্রহণ শুরু করে ১৯৯৮ সাল থেকে। বাংলাদেশ পুলিশ ২১ টি দেশে জাতিসংঘের ২২ টি মিশনে অংশ নিয়েছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url