উয়ারী বটেশ্বর কোথায় অবস্থিত
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে উয়ারী বটেশ্বর কোথায় অবস্থিত হয় এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আপনি যদি না জেনে থাকেন যে উয়ারী বটেশ্বর কোথায় অবস্থিত তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য যার মাধ্যমে আপনি উয়ারী বটেশ্বর কোথায় অবস্থিত এবং উয়ারী বটেশ্বর এর আবিষ্কার ও ইতিহাস সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জানতে পারবেন।
উয়ারী বটেশ্বর আবিষ্কার
উয়ারী বটেশ্বরের প্রায় ৫০ টি প্রত্নস্থান থেকে প্রচুর নির্দেশনা পাওয়া গিয়েছে। সেগুলোর মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ার। যেমন নব্য প্রস্তর যুগের কাঠের তৈরি হাতিয়ার, পাথরের দুদাড়ি কুঠার, ছুরি হাতুড়ি বাটালি লৌহবল্লম ইত্যাদি । নরসিংদী জেলার যে প্রাচীন শিল্প বাণিজ্যের প্রথম প্রসার লাভ করেছিল তা জানা যায় এখানে প্রাপ্ত বিভিন্ন ছাপাঙ্কিত রুপমুদ্রা বাটখারা এবং আরো কিছু নিদর্শন থেকে।সে সময়ের ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য ওয়ারী বটেশ্বর এলাকার মানুষদের নির্দিষ্ট মাপের কিছু বাটখারা প্রয়োজন ছিল। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্য বিভিন্ন নিদর্শন যেমন সাউন্ড with আকারের কাঁচের পুতিএবং রোল টেড মৃত পাত্র পাওয়া গেছে এখানে। এ কারণে ধারণা করা হয় দূর-দূরান্ত জনপদ এবং শহরগুলোর সাথে ওয়ারী বটেশ্বরের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও যোগাযোগ ছিল।
উয়ারী বটেশ্বর কোথায় অবস্থিত
উয়ারী বটেশ্বর বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থল । নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত উয়ারী এবং বটেশ্বর। গ্রাম দুটি ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রার প্রাপ্তিস্থান হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে পরিচিত । প্লাইসটোসিন যুগে গঠিত মধুপুর গড়ে পূর্ব সীমান্ত অবস্থিত এই গ্রাম দুটিতে নিবিড় অনুসন্ধান ও সীমিত প্রত্নতাত্ত্বিক খননের আবিষ্কৃত হয়েছিল আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন দুর্গো নগর। ১৯৩০ এর দশকের মোঃ হানিফ পাঠান নামে স্কুল শিক্ষক প্রথম উয়ারী বটেশ্বরী প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব জনসম্মুখে কে তুলে ধরেন। পরবর্তী সময়ে তার পুত্র মোঃ হাবিবুল্লাহ পাঠান উক্ত স্থানের প্রত্ববস্তু সংগ্রহ গবেষণার কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিন পর ১৯৯৬ সাল থেকে উয়ারী বটেশ্বর অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক পরীদের কাজ সম্পন্ন করা হয় এবং ২০০০ সাল থেকে উয়ারী বটেশ্বর নিয়মিত প্রত্নতাত্ত্বিক খননের কাজ শুরু হয়। ইতিপূর্বে গ্রাম দুটিতে কৃষকের জমি চাষ ও নালা কাটা গৃহস্থের ঘর তৈরি জন্য মাটি কেটে গর্ত করে বর্জ্য গর্ত মাটি সংগ্রহের ফলে অনেক উন্মোচিত হয়েছে। আরো পাওয়া গেছে বিচিত্র স্বল্প মূল্যবান পাথর ও কাঁচের পুতির রূপমুদ্রা।
দুইটির অধিকাংশ স্থান জুড়ে প্রাচীন বসতি ছিল। এছাড়াও পার্শ্ববর্তি গ্রাম যেমন রাঙ্গারটেক,সোনারু তলা, কেন্দুয়, মরজাল, চন্ডীপাড়া, পাটুলি জয়মঙ্গল হরিসাঙ্গন, যশোর, কুন্ডাপাড়া,গোদাশিয়া এবং আব্দুল্লাহ নগরে ও প্রাচীন বসতি চিহ্ন পাওয়া যায়। উয়ারি দুর্গ নগরীর নিকটবর্তী এবং আবিষ্কৃত প্রায় অর্ধশতাধিক প্রত্নস্থানের বিচারে ধরে নেয়া যায় যে আদিবাসীরা ছিল কৃষিজিবি এবং এদের উৎপাদিত ফসলনগরের বসবাসরত ধনিক বণিক, পুরোহিত কারিগর ও রাজকর্মচারীদের খাদ্য চাহিদা পূরণ করত। উয়ারী বটেশ্বরের আদিবাসীগণ উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত ছিল। তারা ধাতু গলিয়ে মুদ্রা তৈরি করার প্রযুক্তি জানতো পুত্তির সঙ্গে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে অলংকার তৈরি করতে পারত।উত্তরাঞ্চলীয় কালো মসৃণ মূৎপাত্রের সঙ্গে নগর সংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। কারণ উপমহাদেশের দ্বিতীয় নগর সভ্যতার প্রত্নস্থানে গুলোতে উত্তরাঞ্চলীয় কালো মসৃণ মূৎপাত্র পাওয়া যায়।
উয়ারী বটেশ্বর এর ইতিহাস
ধারণা করা হয় খ্রিষ্টাব্দ ৪৫০ শতাব্দীতে মারুয়ার রাজবংশের আমলে ওয়ারী বটেশ্বরের এই দুর্গ নগরীতে মানুষের প্রথম বসবাস শুরু হয়। প্রচুর ফসলসহ এখান থেকে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক গুলো যেমন কাঠের তৈরি বাটালি হাতের ব্যবহার উপযোগী কোটার ইত্যাদি যাচাই করে ইতিহাসবিদরা মনে করেন এই এলাকায় মানববসতি করে উঠে ঠিক নব্য প্রস্তর যুগের প্রথম দিকেই।পরবর্তী উয়ারী বটেশ্বর এর খনন কাজ চালানোর ফলে সময়ে ফলন আরো কিছু প্রত্নতত্ত্ব পাওয়া যায়।সেসব নির্দেশন যেমন কালো মাটির পাত্র মাটিতে গর্ত করে বসবাস করার ঘর ইত্যাদি পর্যালোচনা করে ধারণ করা হয়, এখানে তাম্র প্রস্তর যুগেও মানুষের বসবাস ছিল। এর থেকে অনুমান করা হয় ওয়ারী বটেশ্বর এর বর্তমান যে নগরীর সন্ধান পাওয়া গেছে তার বয়স প্রায় ২৫০০ বছর ।
উয়ারী বটেশ্বরের প্রাপ্ত অনেক প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন পরীক্ষা করে জানা যায়,এ নগরের সাথে ৪০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রাচীন সিল্ক রুটের ও। সংযোগ ছিল নদী বন্দর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হওয়ায় ভারতীয় উপমহাদেশের তৎকালীন অনেক প্রাচীন নগরী ভূ-মহাসাগর ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অনেক পুরাতন অঞ্চলের সাথে উয়ারী বটেশ্বরের যোগাযোগ ছিল। তাই ধরে নেওয়া হয় ওয়ারী বটেশ্বরের হচ্ছে বাংলাদেশের সবচাইতে প্রাচীন মহাজনপদ অসম রাজার গড় নামে যে দুর্গটি বর্তমানে মাটি বাধ আছে তা নগরেরটির রাজধানী