কোকাকোলা কোন দেশের কোম্পানি

কোকাকোলা বাংলাদেশের প্রচলিত কোমল পানীয় মধ্যে অন্যতম, সারা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, হোটেল বা জেনারেল ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, ভেন্ডিং মেশিনসহ বিভিন্ন স্থানে কোকা-কোলা বিক্রি হয়। আজকের এই টিউটোরিয়ালের কোকাকোলা কোন দেশের কোম্পানি, কোকাকোলা কোম্পানির মালিক কে এবং কোকাকোলা কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি? সহ কোকা-কোলা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি কোকাকোলা কোন দেশের কোম্পানি বা কোকাকোলা বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহল এই পোষ্টটি আপনার জন্য। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক কোকাকোলা কোন দেশের কোম্পানি। 

কোকাকোলা কোন দেশের কোম্পানি

কোকাকোলা যার সংক্ষিপ্ত নাম কোক (Coke) কোকা-কোলা কোম্পানির দাবি অনুসারে বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশে কোকা-কোলা বিক্রি হয়। কোকা-কোলা কোম্পানির রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক করা হয় ১৯৪৪ সালের মার্চ মাসের ২৭ তারিখে। কোকাকোলা উৎপাদন করা হয় হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টা শহরে অবস্থিত দ্য কোকা কোলা কোম্পানিতে। অর্থাৎ আমরা এক কথায় বলতে পারি কোকাকোলা আমেরিকান কোম্পানি।

কোকাকোলা কবে আবিষ্কার হয়

কোকাকোলার উৎপত্তি হয়েছিলো একটি ওষুধ হিসেবে। ১৮৮৬ সালে আমেরিকান ড্রাগিস্ট ও রসায়নবিদ জন পেম্বারটন কোকাকোলার ফর্মুলা আবিষ্কার করেন। উইকিপিডিয়ার তথ্যসুত্রে জানা যায় ১৮৬৫ সালে কলম্বাসের যুদ্ধ চলাকালিন জন পেম্বারটন তার বুকে তরবারির আঘাত পান। এই আঘাতের ব্যাথা থেকে বাঁচতে তিনি মরফিনে আসক্ত হয়ে পড়েন। তারপর তিনি এই আসক্তি থেকে বাঁচতে নানান পরীক্ষা নিরিক্ষা শুরু করেন। টানা এক বছর বিভিন্ন পরীক্ষার পর জন পেম্বারটন কোকাকোলার ফর্মুলা আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে জন পেম্বারটন দাবী করেছিলেন কোকাকোলা মরফিন আসক্তি, বদহজম বা অজীর্ণ, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, মাথাব্যথা, ধ্বজভঙ্গ সহ অনেক রোগের প্রতিকার করে।

কোকাকোলা কোম্পানির মালিক কে

কোকাকোলার উৎপত্তি হয়েছিলো একটি ওষুধ হিসেবে। তবে ব্যবসায় কোকা-কোলাকে পরিবেশন ও বিপণন করেন আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ আসা গ্রিগস ক্যান্ডলার। ১৮৮৮ সালে কোকাকোলার আবিষ্কারক জন পেম্বারটনের কাছ থেকে ২৩৮ ডলার দিয়ে কোকাকোলার রেসিপি কিনে নিয়েছিলেন আসা গ্রিগস ক্যান্ডলার, তারপর ১৮৯২ সালে আসা গ্রিগস ক্যান্ডলার দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। কোকাকোলা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এরকম বিশ্বাসের কারণে পুরো যুক্তরাষ্ট্রেই এটি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এবং আস্তে আস্তে সারা বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয় কোমল পানীয় হয়ে ওঠে এই কোকাকোলা। বর্তমানে কোকাকোলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হচ্ছেন জেমস কুইন্সি।

কোকাকোলার তৈরির উপাদান

বছরের পর বছর ধরে অনেকেই কোকাকোলা তৈরির উপাদান খুঁজছেন, কিন্তু কেউই এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেননি। কারণ কোকাকোলার গোপন সুত্র আমেরিকার আটলান্ট সদর দফতরে ওয়ার্ল্ড অফ কোকা-কোলার একটি ভল্টে রাখা হয়েছে। তবে কিছু কিছু বিজ্ঞানী দাবী করেন যে তারা কোকাকোলার তৈরির উপাদান বা গোপন ফরমুলার সন্ধান পেয়ে গেছেন। সেই বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে কোকাকোলার তৈরির উপাদানের কিছু বিষয় তুলে ধরা হল।

প্রাকৃতিক ফ্লেভার বা স্বাদ এক ক্যান কোক (১২ ফ্লুইড আউন্স/৩৫৫ মিলিলিটার)-এ ৩৯ গ্রাম শর্করা (সম্পূর্ণটাই চিনি থেকে) থাকে। এছাড়া থাকে ৫০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, সুকরোজ বা হাই-ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপের পরিমাণ দেশ বা এলাকার ওপর ভিত্তি করে। ক্যাফেইন ফসফরিক এসিড বা ক্যারামেল (ই১৫০ডি) পটাশিয়াম, এছাড়াও সাইট্রিক অ্যাসিড ৩ আউন্স, ক্যাফেইন ১ আউন্স, চিনি ৩০ (একক উল্লেখ নেই) পানি ২ দশমিক ৫ গ্যালন, কোকার ৩ ড্রামস ইউএসপি তরল নির্যাস, লেবুর জুস ২ পাইন্টের কিছু বেশি (১ পাইন্ট = ব্রিটিশ ৫৬৮ এমএল, মার্কিন ৪৭৩ এমএল), ভ্যানিলা ১ আউন্স, কারামেল (পোড়া চিনি) দেড় আউন্স এবং রং ও ৭ঢ এর ফেভার।

কেকোকোলা কোম্পানি বাংলাদেশ

বাংলাদেশে কোকাকোলার যাত্রা শুরু হয় ১৯৬২ সালে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠান তাবানী বেভারেজ ১৯৬২ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কোকাকোলার বোতলজাতকরণ করেন। ২০১৭ সালে কোকাকোলার একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশে ৭৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় একটি বোতলজাতকরণ কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে। এবং এখান থেকেই সারা বাংলাদেশের কোকাকোলা রপ্তানি হয়।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url