সংস্কৃতি ও সভ্যতা এর মধ্যে পার্থক্য কি

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে সংস্কৃতি ও সভ্যতা এর মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন সংস্কৃতি ও সভ্যতা এর মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন সংস্কৃতি ও সভ্যতা এর মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক সংস্কৃতি ও সভ্যতা এর মধ্যে পার্থক্য কি।

আমাদের বিশ্ব, সাধারন প্রশ্ন উত্তর, নতুন বিশ্ব, অজানা তথ্য, আজকের বিশ্ব, সাধারন জ্ঞান, জেনারেল নলেজ, কুইজ, ধাঁধা, এমসিকিউ, আইকিউ, বিসিএস প্রিলিমিনারি,

সংস্কৃতি ও সভ্যতা এর মধ্যে পার্থক্য কি

আমরা যা আছি বা যেমন আছি তা হলো কালচার  বা সংস্কৃতি। কিন্তু আমাদের যা আছে তাই আমাদের সভ্যতা। সংস্কৃতি আগে কিন্তু সভ্যতা পরে। সংস্কৃতি হচ্ছে সম্পূর্ণ ঐতিহ্যগত  কিন্তু , সভ্যতা হল মহান এবং ছোট ঐতিহ্য। সংস্কৃতি অতি জৈব, কিন্তু সভ্যতা বাস্তব সংস্কৃতির একটি অংশ। সংস্কৃতি আমাদের অভ্যন্তরীণ  সত্তাকে বিকশিত করতে সাহায্য করে এবং যেখানে সভ্যতা আমাদের বাইরের রূপের জন্য কাজ করে। সংস্কৃতি কঠোর ভাবে আমাদের জীবন বা জীবন যাত্রার উপর প্রভাব ফেলে । কিন্তু সভ্যতা এতো কঠোর ভাবে আমাদের জীবন বা জীবন যাত্রার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।

সংস্কৃতি সহজে  শিখার বিষয় নয়। কিন্তু, সভ্যতা অপেক্ষাকৃত করায়ত্ত করা  সহজ। নকল সভ্যতা তৈরি করা সহজ। অপর দিকে সংস্কৃতিকে  নকল করা একদম অসম্ভব। সভ্যতা আর সংস্কৃতির মধ্যে আমরা  যতই পার্থক্য দেখানোর চেষ্টা করি না কেনো, প্রকৃতপক্ষে সভ্যতা ও সংস্কৃতি একটি  অপরটির সাথে জরিত।

সংস্কৃতি

সংস্কৃতি  শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ  বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধন। ইংরেজি কালচার এর প্রতিশব্দ হিসেবে সংস্কৃতি শব্দটি ১৯২২ সালে বাংলায় প্রথম ব্যবহার শুরু হয় । সংস্কৃতি বা কৃষ্টি হলো সেই জটিল সামগ্রিকতা  যাতে অন্তর্গত আছে জ্ঞান , বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার বা সমাজের একজন সদস্য হিসেবে মানুষের দ্বারা অর্জিত অন্য যেকোনো সম্ভাব্য সামর্থ্য বা অভ্যাস । ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপিকা হেলেন স্পেনসার ওটেইয়ের মতে, সংস্কৃতি হচ্ছে কিছু বুনিয়াদি অনুমান, মূল্যবোধ ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির, বিশ্বাস, নীতিমালা , প্রক্রিয়া বা আচরণিক প্রথার অস্পষ্ট সমষ্টি যা এক দল মানুষ ভাগ করে নেয় এবং সেই  সমষ্টি দলের প্রত্যেক সদস্যের  আচরণকে এবং তার নিকট অন্য সদস্যের আচরণের অর্থ বা সংজ্ঞায়নকে প্রভাবিত করে কিন্তু নির্ধারিত করে না।সংস্কৃতি শব্দটা এসেছে  মারাঠা থেকে। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বাংলায় কালচার  অর্থে সংস্কৃতি শব্দটা প্রস্তাব করলে রবীন্দ্রনাথ এর অনুমোদন দেন। এর আগে বাংলায় কৃষ্টি  শব্দটি  চালু ছিলো কালচার অর্থে। রবীন্দ্রনাথ কৃষ্টি  শব্দটা মনে করতেন, কৃষির সঙ্গে  সম্পর্কিত, সুতরাং কালচার অর্থে সংস্কৃতিই উপযুক্ত।

সভ্যতা

একটি সভ্যতা হলো কোন জটিল সমাজব্যবস্থা যা নগরায়ন , সামাজিক স্তরবিন্যাস , প্রতীকী যোগাযোগ প্রণালী উদাহরণস্বরূপ, লিখন পদ্ধতি, উপলব্ধ স্বতন্ত্র পরিচয় এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর নিয়ন্ত্রণের মত গুণাবলী  দ্বারা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।  সভ্যতাকে প্রায়শই আরও কিছু সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় যেগুলোর উপর সভ্যতা নির্ভরশীল , আর সেগুলো হলো কেন্দ্রীকরণ , মানুষ এবং অন্যান্য জীবের আবাসন , শ্রমের বিশেষায়িতকরণ, সাংস্কৃতিকভাবে সৃষ্ট  উন্নয়ন আদর্শ, আধিপত্য স্থাপন, ভাস্কর্যের অনুরূপ স্থাপত্য, কর বা খাজনা আরোপ, কৃষির উপর সামাজিক নির্ভরশীলতা, এবং সম্প্রসারণের প্রবণতা। সাংগঠনিক  বসবাসের ক্রমোন্নত স্তর হল সভ্যতা। এর অর্থ হলো এর নিজস্ব  আইন, সংস্কৃতি এবং জীবনব্যবস্থা ও আত্মরক্ষার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। অধিকাংশ  সভ্যতারই নিজস্ব কৃষিব্যবস্থা এবং রাজতন্ত্র বা নির্বাচন ব্যবস্থার ন্যায় সরকারপদ্ধতি রয়েছে। তারা একটি সাধারণ ভাষায় কথা বলে , এবং তাদের নিজস্ব ধর্ম ও শিক্ষাব্যবস্থাও থাকতে পারে। সুমেরীয় ও মিশরীয় থেকে শুরু  করে সকল সভ্যতারই নিজস্ব লিখন পদ্ধতি ছিল। এই লিখন পদ্ধতির  মাধ্যমে তারা তাদের জ্ঞান সংকলন ও সংরক্ষণ করত।




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url