রাগ ও অভিমান এর মধ্যে পার্থক্য কি

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে রাগ ও অভিমান এর মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন রাগ ও অভিমান এর মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন রাগ ও অভিমান এর মধ্যে পার্থক্য কি চলুন জেনে নেয়া যাক রাগ ও অভিমান এর মধ্যে পার্থক্য কি।

আমাদের বিশ্ব, সাধারন প্রশ্ন উত্তর, নতুন বিশ্ব, অজানা তথ্য, আজকের বিশ্ব, সাধারন জ্ঞান, জেনারেল নলেজ, কুইজ, ধাঁধা, এমসিকিউ, আইকিউ, বিসিএস প্রিলিমিনারি,

রাগ ও অভিমান এর মধ্যে পার্থক্য কি

রাগ আর অভিমান ভিন্ন দুটি মানসিক অনুভুতি । রাগের সাথে হিংসাত্মক মনোভাব জড়িত থাকে। রাগ  হলে একজন মানুষ অনেক কিছু করতে পারে যেমন: খুন,রাহাজানি  নেতিবাচক আর রাগ থেকে অনেকে ইতিবাচক কোন কিছু করার চেষ্টা করে। যেমন  অনেকে খারাপ ফলাফল করে এবং সবার ঠাট্রা ও বিদ্রপ  এর শিকার  হয়। তখন ওই ব্যক্তি রাগ ভেতরে পুষে রাখে এবং ভাল ফলাফল করে দেখিয়ে দেয়। রাগ আবার দুই ধরনের হয় প্রকাশিত রাগ এবং অপ্রকাশিত রাগ। যারা  রাগ সহজেই  প্রকাশ করে তারা সাধারণত ভাল মানুষ হয়ে থাকে , আবার কিছু মানুষ আছে যারা রাগ প্রকাশ  না করে না কিন্তু গোপনে অনেক বড়  ক্ষতি করার জন্য তৈরী থাকে। রাগ  কাছে বা দুরের দুই ধরনের মানুষের সাথেই করা যায়। অভিমান রাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটি অনুভুতি। কাছের লোকের উপরই কেবল অভিমান করা যায়। অভিমানের  সাথে অধিকার নামক একটি ব্যাপার থাকে, অর্থাৎ যার উপর অধিকার আছে তার সাথেই শুধু অভিমান করা যায়। যার কাছ থেকে কিছু পাবার আশা আছে,অথবা যাকে কিছু দেবার আশা আছে অভিমান তো তারই উপর করা যায়। অভিমান নিজের মানুষদের সাথে করা যায় , আর রাগ সকলের সাথেই করা যায়।

রাগ মানুষকে ধংশ করে , রাগী মানুষের চেহারাতে দোজখ দেখা যাএ কিন্তু অভিমান হছে কেবল না পাওয়া প্রকাশের একটা হাতিয়ার, যাতে বুক ফাটে  তো মুখ ফাটে না। অভিমানে ভালোবাসা থাকে এবং রাগে ঘৃনা ও প্রতিশোধ প্রবনতা থাকে।

অভিমানে শাসন থাকে, আর রাগে জিঘাংষা থাকে। অভিমানে নিরবতা ও কষ্টানুভতি থাকে আর রাগে গর্জন ও ভয়াবহতা থাকে। অভিমানে দুটি হৃদয় জড়িত থাকে, আর রাগে ততোধিক  ব্যাক্তি জড়িত থাকে। অভিমানের সমাপ্তি হয় ভালোবাসার সুখানুভতি দিয়ে, আর রাগের সমাপ্তি  ঘটে ধন, জন ও সম্মানের  ক্ষতি দিয়ে।

রাগ

তীব্র অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ কে রাগ বলে। এই আবেগের প্রকাশে মুখভঙ্গী বিকৃত হয়ে যায় এবং অপরের কাছে তা ভীতির সঞ্চার করে। ক্রোধ ষড়ঋপুর মধ্যে অন্যতম। অতিরিক্ত ক্রোধের ফলে বাড়তে পারে রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন। হার্টঅ্যাটাক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরনের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।রেগে থাকলে একজন ব্যক্তির শরীরে স্ট্রেস হরমোনের নি:সরণ বেড়ে যায়। রক্তের সুগারের তারতম্য শুরু হয়। যারা প্রায়ই রেগে যান তাদের শুভ বুদ্ধির চর্চাও কমে যায়। অতিরিক্ত ক্রোধের ফলে পাকস্থলীয় কোষ উজ্জিবিত হয়ে পরে এবং এসিড  নির্গমনের পরিমাণ বেড়ে যায়। চিকিৎসকগন ক্রোধ নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।ক্রোধ বা রাগ , একটি স্বাভাবিক তীব্র মানসিক অবস্থা যা অনুভূতিতে  আঘাত প্রাপ্তির ফলে একটি শক্তিশালী অস্বস্তিকর এবং অসহযোগী প্রতিক্রিয়া। ক্রোধের  সম্মুখীন একজন ব্যক্তি মানসিক অবস্থার পাশাপাশি প্রায়ই  শারীরিক প্রভাব অনুভব করেন। যেমন হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি , উচ্চ রক্তচাপ, এবং অ্যাড্রেনালিন এবং নোরাড্রেনালিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। কেউ কেউ রাগকে একটি আবেগ হিসাবে দেখেন যা অস্বস্তিকর উত্তেজনার সৃষ্টি করে এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে । 

অভিমান

প্রিয়জনের দ্বারা যখন এই মান উপেক্ষিত হয়,এবং এর ফলে ব্যক্তি বিশেষের মনে যে বিশেষ অনুভূতি সৃষ্টি হয়, তার দশাকে বলা হয় অভিমান। ক্রোধ স্নেহ মমতা, ভালোবাসা ইত্যাদির মিশ্র অনুভূতির ভাব হলো অভিমান। 

প্রকৃত অভিমানের ভাষা নৈঃশব্দ। যার প্রক্ষোভ প্রকাশ পায় অশ্রুমোচন, দীর্ঘশ্বাস বা গভীর মৌনতায়। প্রকৃষ্ট অভিমান অন্তর্মুখী। তাই কারো অভিমান বুঝতে হলে তার মনের গভীর তলকে অনুভব করতে হয়।  মানুষের মনের গভীরতল থেকে অভিমান যখন মনের উপরিতলে উঠে আসে তখন তার প্রকাশ ঘটে অভিমানী বাক্যে , অশ্রুমোচনে বা মুখভঙ্গীতে। অভিমানের অন্তরালে থাকে ক্রোধ মমতা, স্নেহ ইত্যাদি। অভিমানের  উপরিতলে থাকে ক্রোধে এবং এই ক্রোধের অন্তরালে থাকে প্রেমপূর্ণ প্রশ্রয়। ফলে অভিমানের ক্রোধ হয় কপট। যে কোনো মানুষের উপর রাগ করা যায় , অভিমান সকল  মানুষের উপর করা যায় না। গভীর মমতা বা স্নেহ, প্রগাঢ় ভালোবাসার জনের সাথে অভিমান করা যায়। তার চেয়ে বড় কথা, যে অভিমানের মর্যাদা দিতে পারে, তার কাছেই অভিমান করা যায়। শিল্পাঙ্গনে  রসের তালিকায় অভিমান নেই। সম্ভবত একাধিক রসের সমাহারে অভিমানের  সঞ্চার ঘটে , তাই। এক্ষেত্রে অভিমান প্রকাশিত হয় অন্য রসের অনুষঙ্গ হিসেবে। যেমন শৃঙ্গার বা বাৎসল্য রসের  অনুষঙ্গ হিসেবে মেন অভিমানের সঞ্চার ঘটতে পারে।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url