সূর্যের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রের নাম কি
সূর্য আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রবিন্দু এবং এর প্রধান শক্তির উৎস। এটি একটি প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর পুরানো G-টাইপ প্রধান ক্রম নক্ষত্র, সূর্য পৃথিবীর আবহাওয়া, জলবায়ু, এবং জীববৈচিত্র্যের প্রধান নিয়ন্ত্রক। সূর্যের তাপ ও আলো ছাড়া পৃথিবীতে জীবন টিকে থাকা অসম্ভব, সূর্যের প্রায় ৭৪% হলো হাইড্রোজেন এবং প্রায় ২৪% হেলিয়াম। বাকিটা অক্সিজেন, কার্বন, নিওন, এবং লোহাসহ অন্যান্য মৌল। সূর্যের শক্তি মূলত পারমাণবিক সংযোজনের (Nuclear Fusion) মাধ্যমে উৎপন্ন হয়, যেখানে হাইড্রোজেন পারমাণু হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ শক্তি নিঃসৃত হয় যা আলোক এবং তাপ শক্তি হিসেবে আমাদের পৃথিবীতে পৌঁছে।
সূর্যের ব্যাস প্রায় ১.৪ মিলিয়ন কিলোমিটার। সূর্যের ভর প্রায় ৩৩০,০০০ গুণ পৃথিবীর চেয়ে বেশি। প্রতি সেকেন্ডে সূর্য থেকে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন বিলিয়ন (৪ × 10²⁶) জুল শক্তি নিঃসৃত হয়। সূর্যের তাপমাত্রা মাপার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রকে "পাইরোমিটার" বলা হয়। পাইরোমিটার একটি অপটিক্যাল ডিভাইস যা উচ্চ তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন সূর্যের তাপমাত্রা। এটি তাপ বিকিরণ দ্বারা উৎপন্ন আলো পরিমাপ করে তাপমাত্রা নির্ধারণ করে। অন্যান্য উন্নত টেলিস্কোপ এবং উপগ্রহ ভিত্তিক সেন্সরও সূর্যের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়। সূর্যের তাপমাত্রা বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন রকম হয়:
কোর সূর্যের কেন্দ্র বা কোরের তাপমাত্রা প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রায় ২৭ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট)। এখানে পারমাণবিক সংযোজন ঘটে, যা বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে।
ফোটোস্ফিয়ার এটি সূর্যের দৃশ্যমান পৃষ্ঠ, যার তাপমাত্রা প্রায় ৫,৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রায় ৯,৯৩২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। এটি আমাদের কাছে সূর্যের আলো হিসেবে প্রতিভাত হয়।
ক্রোমোস্ফিয়ার ফোটোস্ফিয়ারের উপরে ক্রোমোস্ফিয়ার অবস্থিত, যার তাপমাত্রা ৬,০০০ থেকে ২০,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রায় ১০,৮৩২ থেকে ৩৬,০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পর্যন্ত হতে পারে।
করোনা সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে বাইরের স্তর হলো করোনা। এর তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রায় ১.৮ থেকে ৫.৪ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট) হতে পারে। করোনার উচ্চ তাপমাত্রা এখনো বিজ্ঞানীদের জন্য একটি রহস্য।