তালেবান কোন দেশের সংগঠন

তালেবান শব্দটির নাম আমরা সবাই কমবেশি শুনেছি, এবং এটাও জানি যে তালেবান হচ্ছে আফগানিস্তানের একটি গুরুত্বপূর্ণ  সংগঠন। এই সংগঠন টি প্রতিষ্টিতহয়েছিলো ১৯৯৪ সালে। যখন আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থায় বৃদ্ধির পরিবর্তন নিয়ে আন্দোলন চলছিল। এটি ইসলামিক শাসন ও আইদেন্টিটির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানের পুরো এলাকায় শারিয়াত আইন ও অনুষ্ঠান প্রয়োগ করা। আমারা আজকে আমাদের  এই টিউটোরিয়ালে তালেবান অর্থ কি, তালেবানের আকিদা কি, তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা কে, তালেবানের সামরিক শক্তি, এবং তালেবান মার্কিন চুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

তালেবান কোন দেশের সংগঠন

তালেবান অর্থ কি

তালেবান শব্দের মূল অর্থ হলো শালিক বা শিক্ষার চাবুক। আরবি ভাষায় যার অর্থ ছাত্র। এসেছে এবং এর অবগতি কারো জ্ঞানের ক্ষেত্রে দক্ষ ও শিক্ষার্থীর উচ্চ স্তরের একজন লোক নির্দেশ করে। এই শব্দটির ব্যবহার মূলত আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ইসলামী শারিয়াতের অনুষারে সমাজ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গঠিত হওয়া তালেবান সংগঠনের প্রকারের প্রতীক হিসেবে হত।

তালেবানের আকিদা কি

তালেবান একটি ইসলামিক সংগঠন ছিল যা আফগানিস্তানে প্রচলিত আফগান সমাজের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং ইসলামিক আইদেন্টিটির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল। তালেবানের আকীদা এবং নীতির মধ্যে অনেক বস্তুতে ইসলামিক শারিয়াতের প্রয়োগ এবং প্রচার ছিল। তালেবান বিশেষত শারিয়াত আইনের আদালত, ক্ষমতাধিকার এবং প্রচারণায় গভীরভাবে বিশ্বাস রাখত।

তালেবানের কোন গুরুত্বপূর্ণ আকীদা অন্যান্য ইসলামিক সংগঠনের সাথে সমতুল্য হতে পারে, তবে অধিকাংশই পুরান এবং স্বার্থপর বর্ণানুমান এবং শারিয়াতের প্রয়োগের উল্লেখ থাকতে পারে। এছাড়াও, তালেবানের আকীদা এবং নীতিগুলি প্রায়ই আফগান সমাজের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় মৌলিক মূল্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হত। তালেবানের সামাজিক এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির অংশে ইসলামিক ধর্মের পুনর্গঠন এবং পুরো আফগান সমাজের ইসলামিক আইদেন্টিটির প্রতিষ্ঠা ছিল।

তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা কে

তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা কর্তা মুলত আফগানিস্তানের মদ্রাসাস থেকে সাংস্কৃতিক ও মতামতিক সংগঠনের আইডিয়া থেকে এসেছিলেন। তালেবানের প্রধান প্রতিষ্ঠাতা এবং আগমন কর্তা ছিলেন আফগানিস্তানের সমৃদ্ধ রাজনৈতিক এবং দার্শনিক ইতিহাসের অংশে। তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা কর্তা মধ্যে তালেবানের প্রথম আমির মোহাম্মদ উমর, এবং তার পরবর্তী আমির মুল্লা উমর মুজাহিদ রয়।

মোহাম্মদ উমর তালেবানের প্রথম আমির হিসেবে ১৯৯৪ সালে প্রথম আমাদের নিয়োগ করেন। তার নেতৃত্বে তালেবান রাষ্ট্রীয় সরকার গঠন করে। তার পরে, মুল্লা উমর মুজাহিদ তালেবানের দ্বিতীয় আমির হিসেবে ১৯৯৬ সালে নিয়োগ করা হয়। তার নেতৃত্বে তালেবান বাড়তি অংশে আফগানিস্তানে শারিয়াতের কানুন প্রয়োগ করে।

এই দুই আমিরের নেতৃত্বে তালেবান আফগানিস্তানে প্রায় পুরোপুরি শাসন করেছিল এবং ইসলামিক শারিয়াতের প্রয়োগের মাধ্যমে দেশটি পরিচালিত করেছিল। তবে, ২০০১ সালে মার্কিন সমর্থনে আফগান বিরোধী আক্রমণের পরে, তালেবানের কাবুল শহর থেকে পতন হয়েছিল এবং তাদের ক্ষমতাধিকার চূর্ণ হয়েছিল।

তালেবানের সামরিক শক্তি

তালেবানের সামরিক শক্তি তারা প্রধানত গুরিলা যুদ্ধে ভূমিকা রাখতেন। তালেবান প্রায়ই লোকসংগ্রহের মাধ্যমে আক্রমণ করত এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের যুদ্ধবিপ্লবী এলাকায় পোষ্যা হত। তারা প্রধানত হিল জমিতে ও বোর্ডার জোনে কার্যকরী ছিলেন, যা কাবুল ও অন্যান্য মহলের সাথে সংযোগ করত।

তালেবানের সামরিক শক্তি উন্নত সামরিক প্রশিক্ষণ, প্রতিষ্ঠিত জুদ্ধ ক্ষমতা, ধৈর্য্য, এবং ইসলামিক মোতায়েন এর ব্যবহারে ভরা হত। তালেবানের সেনাবাহিনী সাধারণত গুলি, রকেট, মাইন, স্বয়ংক্রিয় বিস্ফোরণী উপকরণ এবং সাধারণত হাথের গোলাযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থাকত।

এছাড়াও, তালেবান তাদের সামরিক শক্তিকে স্থায়ী করতে সক্ষম ছিলেন কারণ তারা সংগঠিত, অনুশাসিত এবং জাতিগত আদালত প্রয়োগ করত। তাদের যুদ্ধ কৌশলের প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ, অভিযান পরিচালনা এবং তথ্য সংগ্রহে উত্তম ছিল। তাদের সামরিক শক্তির প্রভাব আফগানিস্তানের বৃহত্তর অঞ্চলে স্থায়ী হত। তবে, ২০০১ সালের মার্কিন সমর্থনে আফগান বিরোধী আক্রমণের পরে, তালেবানের সামরিক শক্তি প্রভাবশালীভাবে ক্ষমতাধিকার চূর্ণ হয়ে গেছে।

তালেবানের বর্তমান প্রধান কে

তালেবানের বর্তমান প্রধান ব্যক্তি পরিচিত নয় কারণ তালেবান একটি সংগঠন যা গোপন থেকে কার্যরত। অবশ্য, প্রধান নেতার পদে বিভিন্ন কার্যকরী ও নেতৃত্বাধীন ব্যক্তিদের উল্লেখ হয়েছে, কিন্তু তাদের সঠিক সনাক্তকরণ অসম্ভব। তালেবান অবশ্য বোধগম্য এবং প্রভাবশালী নেতৃত্বের অধীনে কার্যরত হয়ে থাকে, কিন্তু তারা সাধারণত আধিকারিক নাম বা পরিচিতি প্রদান করেন না। তালেবানের কোনও নেতা বা আমির নির্দিষ্ট না হওয়ায় তাদের সংগঠনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যের উন্নতি করা কঠিন হয়ে থাকে।

তালেবান মার্কিন চুক্তি কবে হয়

তালেবান ও মার্কিন চুক্তি মূলত ২০২০ সালে সাইন হয়েছিল, এটি একটি চেতাবনি সাম্প্রদায়িক সংঘাতের উপর সমাধানের লক্ষ্যে তালেবান এবং মার্কিন সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি ছিল। এই চুক্তিতে মার্কিন সরকার তালেবানের সঙ্গে একটি চুক্তি সাইন করে বাংলাদেশ হয়েছিল। এই চুক্তিতে, মার্কিন সরকার প্রয়োজনীয় সেনা সরঞ্জাম ও বিষয়ে তালেবানের সঙ্গে আলোচনা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ শুরু করে তালেবানের এককতা ও সাংবিধানিক সরকার গঠনে মার্কিন সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। তবে, এই চুক্তিতে সংলগ্ন শর্ত স্বাধীন এবং বোগা নির্মূলের আগ্রহ নিশ্চিত করা হয়েছিল। এই চুক্তির আলোকে, মার্কিন সরকার এবং তালেবানের মধ্যে সম্পর্কের নতুন ধারাবাহিকতা স্থাপনের চেষ্টা করেছিল।

তালেবান কোন দেশের সংগঠন

তালেবান একটি আফগানিস্তানের গুরিলা সংগঠন ছিল, যা ১৯৯৪ সালে পুরোপুরি আফগানিস্তানের অধীনে কাবুল শহর ও অন্যান্য অঞ্চলে কোনো প্রকার আদালতি কার্যক্রম অনুষ্ঠান করে। তালেবান ইসলামী শারিয়াতের অনুসারে সমাজ পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল। এই সংগঠনের সূত্রপাত ঘটে প্রায় পাঁচ দশক পূর্বে, যখন আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থির ছিল। তালেবান সংগঠনের শক্তিরূপে দ্বারা আফগানিস্তানে শারিয়াতের অনুসারে শাসন চালানো হয়। তালেবানের অধীনের আফগানিস্তান বেশ কয়েকবার আমেরিকান সৈন্যের আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছিল এবং ২০০১ সালে মার্কিন সৈন্যের সহায়তায় আফগানিস্তানের শাসন পরিবর্তন হয়েছিল। এখন তালেবান একটি পরিচিতি প্রাপ্ত আফগানিস্তানের পশ্চিমী অঞ্চলের কিছু অঞ্চলে নিজস্ব প্রভুত্ব রাখে।

তালেবান ক্ষমতা দখল করে কবে

তালেবান ক্ষমতা দখল করে ১৯৯৬ সালে। তখন তালেবান প্রায় সমগ্র আফগানিস্তানে আবাদ হয়ে রাষ্ট্রীয় সরকার গঠন করে এবং শারিয়াতের আদালত প্রয়োগ করে। এই সময়ে, তালেবান প্রায় সমগ্র আফগানিস্তানে নিয়ন্ত্রণ অধিকার অর্জন করে, কিছু অঞ্চলে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। তালেবান তাদের শাসনামলে শারিয়াতের কানুন প্রয়োগ করে এবং ইসলামিক আইদেন্টিটি স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করে। 

তালেবানের ক্ষমতা দখলের মূল কারণ ছিল আফগানিস্তানের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থার অস্থিরতা, পূর্বের সরকারের অসমর্থতা, সেনা এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষের দুর্বলতা, এবং তালেবানের আত্মবিশ্বাসের বৃদ্ধি। তাদের সরকারের স্থাপন কে অনেকে রক্ষা প্রয়োজনীয় এবং একটি ইসলামিক শাসন চাওয়ার ফল।  তালেবান এর প্রভাব অধিকাংশই ২০০১ সালের মার্কিন সমর্থনে আফগান বিরোধী আক্রমণের পরে প্রভাবিত হয়েছিল।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url