করলার ইংরেজি কি

প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আজকের এই টিউটোরিয়ালে করলার ইংরেজি কি এই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন করলার ইংরেজি কি তাহলে এই টিউটোরিয়াল টি আপনার জন্য। যা থেকে আপনি জানতে পারবেন করলার ইংরেজি কি চলুন জেনে নেয়া যাক করলার ইংরেজি কি।

করলার ইংরেজি কি

করলার ইংরেজি হলো gourd.

করলা হলো এক প্রকার ফল জাতীয় সবজি। ইংরেজিতে একে Balsam pear, alligator pear, bitter gourd, bitter melon, bitter cucumber ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। করলা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Momordica charantia যা Cucurbitaceae পরিবার সমৃদ্ধ এক প্রকার লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এছাড়া ওকিনাওয়ার আদি ভাষা থেকে উদ্ভূত গয়া এবং সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত 'কারাভেলা নাম দুটিও ইংরেজি ভাষায় প্রচলিত। করলার আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশে যা ১৪শ শতাব্দিতে তা চীনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

করলা তেতো স্বাদযুক্ত ও এর শরীর কাঁটার মত ওয়ার্টে ভরা। পরিণত ফল লম্বাটে, রঙ কাঁচা অবস্থায় সবুজ, পাকলে কমলা অথবা লাল, দৈর্ঘ্য ১২ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার ৫ থেকে ১০ ইঞ্চি, প্রস্থ ৫ থেকে ৭ সেমি হয়ে থাকে। করলা কেটে লবণ জলে ডুবিয়ে রাখলে তিক্ততা কমে। দক্ষিণ এশীয় এই সবজি এখন সারা পৃথিবীতে বিশেষ করে ক্রান্তীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।

করলা গাছ কিউকার্বিটেসি অর্থাৎ শশা পরিবারের সদস্য। এটি একবর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। একই গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল হয় ।

করলার বীজ এঁটেল মাটিতে ২.৫ থেকে ৫ সেমি গভীরে এবং ৯০ থেকে ১২০ সেমি দূরত্বে লাগাতে হয়।

প্রতি ১০০ গ্রাম করলাতে বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ বিদ্যমান 

কার্বোহাইড্রেট  ৩.৭০ গ্রাম,

প্রোটিন  ১ গ্রাম,

ফ্যাট  ০.১৭ গ্রাম,

খাদ্য আঁশ  ২.৮০ গ্রাম,

নায়াসিন  ০.৪০০ মিলিগ্রাম,

প্যান্টোথেনিক এসিড  ০.২১২ মিলিগ্রাম,

ভিটামিন এ  ৪৭১ আই ইউ,

ভিটামিন সি ৮৪ মিলিগ্রাম,

সোডিয়াম  ৫ মিলিগ্রাম,

পটাশিয়াম  ২৯৬ মিলিগ্রাম,

ক্যালসিয়াম  ১৯ মিলিগ্রাম,

কপার  ০.০৩৪ মিলিগ্রাম,

আয়রন ০.৪৩ মিলিগ্রাম,

ম্যাগনেসিয়াম  ১৭ মিলিগ্রাম,

ম্যাঙ্গানিজ ০.০৮৯ মিলিগ্রাম,

জিংক  ০.৮০ মিলিগ্রাম।

অ্যালার্জি প্রতিরোধে এর রস দারুণ উপকারী। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি উত্তম। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে করলার রস খেলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বাতের ব্যাথায় নিয়মিত করলা রস খেলে ব্যাথা আরোগ্য হয়। আর্য়ুবেদের মতে করলা কৃমিনাশক, কফনাশক ও পিত্তনাশক। করলার জীবাণু নাশক ক্ষমতাও রয়েছে। ক্ষতস্থানের উপরে পাতার রসের প্রলেপ দিলে এবং উচ্ছে গাছ সেদ্ধ জলদিয়ে ক্ষত ধুলে কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষত শুকিয়ে যায়। অ্যালার্জি হলে এর রস দু চা চামচ দুবেলা খেলে সেরে যাবে। চর্মরোগেও করলা বেশ উপকারী। এছাড়া জন্ডিস ও লিভারের অসুখে খাবারে অরুচি দেখা দিলে করলা খেলে রুচি আসে। 

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সবজি হচ্ছে করলা। করলা স্বাদে তিক্ত হলেও বাংলাদেশের সকলের নিকট এটি প্রিয় সবজি হিসেবে পরিচিত। ১০০ গ্রাম ভক্ষণ যোগ্য করলায় ১.৫ থেকে ২.০ ভাগ আমিষ, ২০ থেকে ২৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ১.৮ থেকে ২.০ মিলিগ্রাম লৌহ এবং ৮৮.৯৬ মিলিগ্রাম খাদ্যপ্রাণ সি রয়েছে। 

 উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় করলা ভাল জন্মে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে পরাগায়ন বিঘ্নিত হতে পারে। সব রকম মাটিতেই করলার চাষ করা যেতে পারে। জৈব সার সমৃদ্ধ দোআঁশ বেলে দোআঁশ মাটিতে ভাল জন্মে। 

বারি করলা

জাতটিতে গাঢ় সবুজ রংয়ের ২৫ থেকে ৩০ টি ফল ধরে গাছ প্রতি

প্রতি ফলের গড় ওজন ১০০ গ্রাম যা লম্বায় ১৭ থেকে ২০ সেমি এবং ব্যাস ৪ থেকে ৫ সেমি।

চারা রোপণের ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রথম ফল তোলা যায়।

গজ করলা

জাতটিতে সবজ রংয়ের ১৫ থেকে ২০ টি ফল ধরে গাছ প্রতি

প্রতি ফলের গড় ওজন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম যা লম্বায় ২৫ থেকে ৩০ সেমি এবং ব্যাস ৬ থেকে ৭ সেমি।

উচ্ছে এবং করলার বীজ সরাসরি মাদায় বোনা যেতে পারে। এৰেত্রে প্রতি মাদায় কমপক্ষে ২টি বীজ বপন বক পলিব্যাগে উৎপাদিত ১৫ থেকে ২০ দিন বয়সের চারা রোপণ করতে হবে। উচ্ছের ক্ষেত্রে সারিতে ১.০ মিটার ও করলার জন্য ১.৫ মিটার দূরত্বের মাদা তৈরী করতে হবে। মাদা বীজ বুনতে বা চারা রোপণ করতে হলে অন্তত: ১০ দিন আগে মাদা নির্ধারিত সার প্রয়োগ করে তৈরী করে নিতে হবে। চারা গজানোর ৪৫ থেকে ৪৫ দিন পর উচ্ছের গাছ ফল দিতে থাকে। করলার বেলায় প্রায় ২ মাস লেগে যায়।

স্ত্রীফুলের পরাগায়নের ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়।

ফল আহরণ একবার শুরু হলে তা দুমাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে ফলন। উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে উচ্ছে ও করলার হেক্টর প্রতি ফলন যথাক্রমে ৭ থেকে ১০ টন ৩০ থেকে ৪০ কেজি শতাংশ এবং ২০ থেকে  ২৫ টন ৮০ থেকে ১০০ কেজি শতাংশ পাওয়া যায়।